কলকাতায় ২য় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করলেন তথ্যমন্ত্রী

436

ঢাকা, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : কলকাতায় দ্বিতীয়বারের মতো চারদিনব্যাপী বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ শুক্রবার বিকেলে কলকাতার নন্দন চলচ্চিত্র কেন্দ্রের দু’নম্বর প্রেক্ষাগৃহে এই চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় এই উৎসবের আয়োজন করেছে। ১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি কোলকাতার নন্দন কেন্দ্র ও নজরুল তীর্থে বাংলাদেশের ২৩ টি সিনেমা প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
তথ্যমন্ত্রীর দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে জনপ্রিয় গণমাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি ও ভারতীয় সেনাদের দেয়া রক্তে পদ্মা-মেঘনা-যমুনার পানি আজো লাল। কোনো ষড়যন্ত্রই দু’দেশের এ মেলবন্ধনের প্রতি হুমকি হতে পারেনা।
হাছান মাহমুদ বলেন, চলচ্চিত্র মাধ্যমটি মানুষকে সবচেয়ে বেশি কাছে টানে, মানুষের মাঝে আবেগ সঞ্চার করে, তাকে ভাবতে শেখায়। বাংলাদেশ ও ভারতে দু’দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী দু’দেশের সম্পর্ককে আরো গভীর করবে, বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশ এপর্যায়ে উন্নীত হতো না।
এসময় বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ ও দুই-বাংলার হৃদয়জয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
বিজাতীয় আগ্রাসন মোকাবিলা করে বাঙালি সংস্কৃতিকে বুকে ধরে রাখতে দু’বাংলা একসাথে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্বের সকল জাতিসত্তা আজ বিশ্বায়ন মোকাবিলার চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে। বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন মোকাবিলা করে নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, নীতি-নৈতিকতা বুকে ধারণ করার চ্যালেঞ্জ জয়ে কোনো ছাড় নয়। আমরা পাশ্চাত্যকে জানবো, নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করবো, অনুকরণ নয়।
গতবছর জানুয়ারিতে কলকাতায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব সূচনা করেছিলেন তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: মিজান-উল-আলম, ভারতীয় সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, চলচ্চিত্রশিল্পী প্রসেনজিৎ, কোয়েল মল্লিক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ, কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মো: মোফাখখারুল ইকবাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবারের উৎসবের চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে, পুত্র, আমাদের বঙ্গবন্ধু, পোস্টমাস্টার ৭১, স্বপ্নজাল, দহন, রাজনীতি, হেডমাস্টার, জীবনঢুলি, নেকাববরের মজাপ্রয়াণ, ঘেটুপুত্র কমলা, নূরু মিয়া ও তার বিউটি ড্রাইভার, গহীন বালুচর, আলফা, জান্নাত, জন্মভূমি, রাজপুত্র, পাঠশালা, সনাতন গল্প, মহুয়া সুন্দরী, জাগে প্রাণ পতাকায় জাতীয় সংগীতে, খাঁচা, গেরিলা ও চিত্রা নদীর পাড়ে।
চলচ্চিত্র উৎসবের পাশাপাশি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জোড়াসাঁকোর বাড়ি ও শান্তিনিকেতন পরিদর্শন শেষে সোমবার সকালে তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।