বাসস ক্রীড়া-১৬ : এশিয়ান কাপের ফাইনালের কাল কাতারের মুখোমুখি হবে চার বারের চ্যাম্পিয়ন জাপান

374

বাসস ক্রীড়া-১৬
ফুটবল-এশিয়ান কাপ-ফাইনাল-প্রিভিউ
এশিয়ান কাপের ফাইনালের কাল কাতারের মুখোমুখি হবে চার বারের চ্যাম্পিয়ন জাপান
আবুধাবী, ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : আগামীকাল এশিয়ান কাপ ফুটবলের ফাইনালে কাতারের মুখোমুখি হবে চার বারের চ্যাম্পিয়ন জাপান। তবে ফাইনালকে ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে এবারের আসরের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি। টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছালেও আসরের শুরু থেকেই সংগ্রাম করতে হয়েছে ব্লু সামুরাইদের। তবে ফাইনালের আগে মাঠের ভেতর ও বাইরের নানান সমস্যার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন জাপানী অধিনায়ক মায়া ইয়োসিদা।
সাউদাম্পটনের এই ডিফেন্ডার টুর্নামেন্ট আয়োজকদেরও আহ্বান জানিয়েছেন ‘বোকামীর জন্য’ সৃষ্ট নানান সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য। তার মতে এ কারণে ক্ষুন্ন হচ্ছে এশিয়ান ফুটবলের সুনাম।
এমন এক সময় জাপানী অধিনায়ক অভিযোগ করলেন, যখন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন এএফপিকে (এএফসি) নিশ্চিত করেছে যে কাতারের দুইজন খেলোয়াড়ের এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের যোগ্যতা নেই বলে স্বাগতিক আরব আমিরাত যে অভিযোগ করেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
আজ ইয়োসিদা বলেন, ‘আমার মনে হয় দায়িত্ববানদের পেনাল্টি দেয়া ও নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা দরকার আয়োজকদের।’ ইরানের বিপক্ষে জাপানের ৩-০ গোলের জয় পাওয়া ম্যাচটিও ছিল বিতর্কে ভরা।
ই্য়োসিদা বলেন, ‘এই টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো সরাসরি বিশ্বব্যাপী সম্প্রচারিত হচ্ছে। তাই এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হবে না যাতে বোকামী প্রকাশিত হয়। বিশেষ করে খেলা শেষে।
আমরা ঐক্যবদ্ধ হবার স্লোগানকে ধারণ করে এই টুর্নামেন্টে সামিল হয়েছি, যার মাধ্যমে গোটা বিশ্বে এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করছি। সুতরাং স্বচ্ছ খেলা দিয়ে এবং ভাল খেলা আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এশিয়াকে উপস্থাপন করাটা জরুরি।’
আমিরাতে টুর্নামেন্টের স্লোগানকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। ফাইনালের টিকিট পাওয়া কাতারকে এমনিতেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে আঞ্চলিকভাবে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে। তার উপর আবার স্থানীয় সমর্থকররা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কাতারী সমর্থকদের স্বাভাবিক চলাচলে। মঙ্গলবার অনুষ্টিত দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে কাতারের কাছে স্বাগতিক দল ৪-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হবার পর মাঠে বয়ে যায় ‘প্লাস্টিক বোতল বৃষ্টি’। এ সময় মাঠে জুতাও নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ স্বাগতিক সমর্থকরা। যার তদন্তও বর্তমানে চলমান রয়েছে।
টুর্নামেন্টের শিরোপার ফেভারিট ইরানের বিপক্ষে জাপানের অঘটনের জয়টিও ছিল বিতর্কিত। যে ঘটনার প্রতিক্রিয়াও উগ্রভাবে প্রকাশ করেছে খেলোয়াড়রা। ইয়োসিদা বলেন, ‘খেলা শেষে লিফটে ইরানের কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ ঘটেছে। এ সময় মাঠের ঘটনার জন্য তারা দু:খ প্রকাশ করেছে।’
এখন আগামীকাল আবুধাবীতে অনুষ্টিত হতে যাওয়া এশিয়ান কাপের ফাইনাল ম্যাচটির দিকে তাকিয়ে আছেন জানিয়ে জাপানি অধিনায়ক বলেন,‘ আমার প্রত্যাশা প্রতিদ্বন্দ্বি দুটি দলই শুক্রবার তাদের শতভাগ সামর্থ্য দিয়ে খেলবে। এ সময় পরিচ্ছন্ন খেলা দিয়ে আমরা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই আমরা কেমন। এটি হবে একটি বড় উদ্যোগ। শুধু জাপানের জন্য নয়, গোটা এশিয়ান ফুটবলের জন্যও।’
বিতর্কিত রেফায়িংয়ের কারণে এবারের এশিয়া কাপে নানান বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে স্বাগতিক আরব আমিরাত দুই দফা রেফারির কৃপা লাভ করেছে। বিলম্বিত পেনাল্টি পেয়ে তারা ম্যাচ জয় করেছে, যা ক্ষুব্ধ করেছে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় ও কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের। ইয়োসিদা বলেন,‘ এশিয়ান কাপে আমাদেরকে নিজেদের নিয়ন্ত্রন করা খুবই গুরুত্বপুর্ন। রেফারিরা ইউরোপীয় মানের তো বটেই জাপানের মানের চেয়েও আলাদা স্টাইলে খেলা পরিচালনা করছে। আমার মনে হয় আমরা এর সঙ্গে যথেষ্ট ভাল ভাবেই মানিয়ে নেয়ার চেস্টা করেছি।’
সঠিক সময়ে জ্বলে উঠেই ফেভারিট জাপান তাদের পঞ্চমবারের মত শিরোপা জয়ের রেকর্ডে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ফাইনালে উঠেছে। তবে টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত অংশ নেয়া ছয় ম্যাচের সব কটিতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জয় নিয়েই প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেছে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতার। যে কারণে বেশ আত্মবিশ্বাসী দলটির কোচ ফেলিক্স সানচেজ।
স্প্যানিশ এই কোচ বলেন,‘ আমাদের জন্য ফাইনালে পৌঁছানোটা কোন বিস্ময় ছিলনা।’ সমর্থন জানিয়ে কোচ হোসে মরিনহো ও আর্সেন ওয়েঙ্গারের কাছ থেকে ক্ষুদে বার্তা পাওয়া কাতারের এই কোচ বলেন,‘ ছেলেদের উপর আমার পুর্ন আস্থা রয়েছে। ইতিহাস রচনার জন্য তারা বেশ অনুপ্রানীত।’
এদিকে গণমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আট গোল নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড বইয়ে যৌথ স্থান করে নেয়া কাতারি স্ট্রাইকার আলমোয়েজ আলী ও ডিফেন্ডার বাসাম আল-রাভির বিরুদ্ধে এএফসির তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। তবে এএফসির এসব ব্যবস্থার খবরে কোন প্রকার চিন্তিত হবার আশংকা উড়িয়ে দিয়েছেন সানচেজ। তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় সম্পর্কে আমি অবগত নই। সব খেলোয়াড়রাই আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। সুতরাং ভয়ের কিছু নেই।’
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/২০০৫/মোজা/স্বব