বাসস ক্রীড়া-১৬ : সাকিবের চোখে স্পেশাল

305

বাসস ক্রীড়া-১৬
ক্রিকেট-ঢাকা টেস্ট
সাকিবের চোখে স্পেশাল
ঢাকা, ২ ডিসেম্বর ২০১৮ (বাসস) : ঢাকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানের ব্যবধানে হারিয়ে অবিস্মরণীয় এক জয়ের স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ২০০০ সালে টেস্ট আঙ্গিনায় পথ চলা শুরুর পর এবং ১১১টি টেস্ট খেলার পরও কোন প্রতিপক্ষকে ইনিংস ব্যবধানে হারাতে পারেনি টাইগাররা। অবশেষে নিজেদের ১১২তম টেস্ট ম্যাচে কোন প্রতিপক্ষকে ইনিংস ব্যবধানে হারানোর নজির স্থাপন করলো বাংলাদেশ। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটিকে স্পেশাল বললেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
ঢাকা টেস্ট শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেন, ‘আমরা একশ’র ওপরে টেস্ট ম্যাচ খেলেছি। এই প্রথম এমন কিছু করলাম। অবশ্যই স্পেশাল কিছু, তা না হলে তো ১৮ বছরে একশ’র বেশি টেস্ট খেলেছি। এই ফার্স্ট টাইম এরকম কিছু হলো। এর ভেতরে আমরা কিন্তু ছোট টিমের সাথেও খেলেছি। তারপরও আমরা এমন কিছু করতে পারিনি। তাই এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন বলে আমি মনে করি। এর আগে আমাদের ওপরের কোন টিমকে হোম কন্ডিশনে হোয়াইটওয়াশ করিনি। সব কিছু মিলিয়ে আমাদের জন্য সিরিজটি অনেক বড় পাওয়ার সিরিজ ছিল।’
গেল জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করে বাংলাদেশ দল। দুই ম্যাচের সিরিজে ক্যারিবীয়দের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয় টাইগাররা। সেই হারের বদলা একই ভাবে দেশের মাটিতে নিয়ে নিলো বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইওয়াশ করলো টাইগাররা। তবে এই সিরিজ জয়কে বদলা বলছেন না সাকিব। দলের সম্মলিত প্রচেষ্টার ফলেই এমন জয় বলে মনে করেন তিনি, ‘জবাব দেয়া না। তবে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ের একটা অ্যাডভান্টেজট থাকে। তারা তাদের হোমের অ্যাডভান্টেজট নিতে পেরেছে, আমরা আমাদের হোমের অ্যাডভান্টেজটটা নিতে পেরেছি। ওভাবে হারার পর আমাদের অবশ্যই অনেক কিছু প্রমানের ছিলো। অ্যাট লিস্ট হোমে, সেটা আমরা করতে পেরেছি। সেটার জন্য আমি প্রতিটা টিম মেটকেই ধন্যবাদ জানাই, কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে সবাই যে এই জিনিসটায় বিশ্বাস করেছে। সত্যি কথা বলতে, আমি অনেক ডিমান্ডিং ছিলাম এই সিরিজটাতে। সবার কাছেই খুব বেশ করে চাচ্ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ সবাই যার যার সাধ্য মত চেষ্টা করেছে। কেউ হয়তো সফল হবে কেউ হবে না। সবাইর মনের ভেতর ওই বিশ্বাসটা ছিল, সবাই দলের জেতার জন্য অবদান রাখতে চায়। সবসময় রাখতে চায়, কিন্তু আলাদা রকমের একটা আগ্রহ ছিল সেটা বোঝা যাচ্ছিলো।’
তারপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজে ঐ সিরিজ হারের দুঃস্মৃতি ভুলতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ বলে জানান সাকিব, ‘আমি মনে করি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে আমরা সব খেলোয়াড়ই ছিলাম, আমরা কেউই এধরনের পারফমেন্স আশা করি নাই। আমরা এমন হারের পর মিটিং করেছি, তারপর ওয়ানডে-টি-২০তে ভালো পারফরমেন্স করেছি। যেহেতু আমরা টেস্ট ফরম্যাটে ভালো করিনি, আমাদের হোমে একটা সুযোগ ছিল প্রমাণ করার। ওই কারণেই আমরা চেয়েছিলাম কিছু একটা করি, যেন মানুষ অন্তত ভুলতে পারে বা বুঝতে পারে যে, তাদের হোমে সুবিধাটা তাঁরা নিতে পেরেছে, আমাদের হোমে আমাদের যতটুকু করা সম্ভব ততটুকু করতে পেরেছি।’
ইনজুরির কারনে গত সেপ্টেম্বর থেকে খেলার বাইরে ছিলেন সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবারো দলে ফিরেন। তবে সিরিজ শুরুর আগ থেকে নিজের খেলা নিয়ে মোটেও আতবিশ্বাসী ছিলেন না সাকিব। আবারো বললেন, কোচের কারনেই মাঠে নেমেছেন তিনি। সাকিব বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম টেস্টটা আমি খেলতে চাই নি। একমাত্র কোচের কারণেই খেলাটা হয়েছে। আমি কখনই খেলতাম না। আমাকে যতবার বলা হয়েছে , আমি বলেছি আমি পারবো না। কারণ আমার ঐ বিশ্বাসই ছিল না। আপনারা যদি আমার বোলিং দেখেন, আমি তিন-চার ওভারের স্পেল করেছি। কারণ আমার শরীরের অবস্থাই ওই রকম ছিল না। কিন্তু ও যেটা বলেছে যে, তুমি ম্যাচ খেলেই ফিট হতে পারবা। আমার মনে হয় আমি একমাত্র খেলোয়াড় ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটে যে ম্যাচ খেলে ফিট হই। তবে একটা জিনিস ভালো যে আমি যে ছোট ছোট অবদান রাখতে পেরেছি। বিশেষভাবে নতুন বলে ব্রেক-থ্রুগুলো আমার কাছে মনে হয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অবশ্যই সবাই ভালো বোলিং করেছে, তবে ওই কন্ট্রিবিউশন গুলো আমি মনে করি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই সিরিজ জয়ের পেছনে।’
টেস্ট সিরিজ অনায়াসে জিতলেও, ওয়ানডে সিরিজে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে বাংলাদেশকে বলে মনে করেন সাকিব, ‘আমার কাছে মনে হয় ওয়ানডে অনেক কঠিন হবে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত হতে হবে। যদিও আমরা ওয়ানডেতে খুবই ভালো খেলছি। কিন্তু আমরা বেশ ভালো একটা প্রতিপক্ষের সাথে তিনটা ওয়ানডে খেলবো। তো আমাদের বেস্ট ক্রিকেটটাই খেলতে হবে যদি ভালো করতে হয়।’
বাসস/এএসজি/এএমটি/১০৩০/স্বব