আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে যুবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

890

ঢাকা, ১ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সরকারের সৃষ্ট সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে এবং একই সঙ্গে অন্যদের জন্য চাকরির সুযোগ তৈরি করতে যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘একটা চাকরির জন্য অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকার পরিবর্তে তোমাদেরকে নিজেদের পায়ের ওপর দাঁড়াতে হবে। তোমাদেরকে নিজেদের কর্মসংস্থানের জন্য নিজেদেরই উদ্যোগ নিতে হবে এবং একই সঙ্গে অন্যদের জন্যও সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় যুব দিবস-২০১৮ এর বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন এবং জাতীয় যুব পুরস্কার-২০১৮ বিতরণকালে এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘একজন উদ্যোক্তা বহু লোকের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করতে পারে। এই সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মূল শক্তি যুবকদের জন্যও বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করছে।’
তিনি জাতীয় যুব দিবস পালনের জন্য যুবকদের অভিনন্দন জানান এবং দিবসের শ্লোগান ‘জেগেছে যুবক গড়বে দেশ, – বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’-এর প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আত্মকর্মসংস্থান এবং অন্যের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৭ জন যুবকের হাতে জাতীয় যুব অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। তিনি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের অভিনন্দন এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান রাসেল বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে যুব মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল্লাহ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। জাতীয় যুব অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলার এসএম শাহজাহান সিরাজ এবং মাদারীপুর জেলার হুমায়ারা লতিফ পান্না বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশের মুক্তিযুদ্ধে যুবকদের ভূমিকার উল্লেখ করে বলেন, আমরা যুবকদের মেধা ও শক্তি কাজে লাগিয়ে দেশ গড়ে তুলবো। তিনি বলেন, আমাদের যুব সমাজ কখনো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কোন অশুভ শক্তির কাছে মাথা নত করবে না। বরং দেশের সংকটময় মুহূর্তে তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি দৃঢ় আস্থা ব্যাক্ত করে বলেন, তারা একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৫০ লাখ লোক যুবক। এই যুবকদের উৎপাদনমুখী কাজে লাগিয়ে আমাদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টকে এগিয়ে নেয়াই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এ লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তার সরকার যুবকদের উন্নয়নের জন্য খুবই আন্তরিক এবং তাদের সার্বিক কল্যাণে সর্বাত্মক প্রচষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নতুন প্রকল্প ও কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার উল্লেখ করে বলেন, যুবকদের প্রশিক্ষণ দিতে সাতটি বিভাগে মোবাইল কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বায়োগ্যাস প্লান্টেও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। সকল জেলায় যুবকদের জন্য প্রশিক্ষণ অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য নতুন নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন এবং বর্তমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যুবনীতি-২০১১ যুবকদের সার্বিক উন্নয়নে আরো সহায়ক হবে। তিনি এই নীতির আলোকে একটি কর্মপরিকল্পনা ও যুব উন্নয়ন ইনডেস্ক গঠনে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল সার্ভিস প্রোগ্রাম পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে।