দেশের সর্বোচ্চ পদে থেকে এ ধরনের দুর্নীতি কাম্য নয় : রায়ের পর্যবেক্ষণ

420

ঢাকা, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, দেশের সর্বোচ্চ পদে থেকে এ ধরনের দুর্নীতি কাম্য নয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, আদালত এ মামলায় ১৫টি ফাইন্ডিংস দিয়েছেন। পাশাপাশি আদালত বলেছেন, এ দেশের ক্ষমতার পাদপীঠে থেকে এ ধরনের অর্থ উপার্জন ক্ষমতা অপব্যবহার করে দলীয় ফান্ডের টাকা ও ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা বিভিন্ন আসামির সহায়তায় প্রধানমন্ত্রিত্বের পদে থেকে কেউ যেনো এ ধরনের অপরাধ না করে সে জন্য তাদের জন্য একটা মেসেজ হিসেবে এ রায় দিয়েছেন।
কাজল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বলেন, সবার জন্য আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই টাকা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে নিয়ে এসে তা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। শুধু তাই নয়, এই ট্রাস্টের নামে তার এক আত্মীয় সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে তিনি কাকরাইলের ৪২ কাঠা সম্পত্তি খরিদ করেছিলেন। এতে তিনি ওই জমির দাম তো দিয়েইছিলেন এর চেয়েও বেশি এক কোটি ৯৪ লাখ টাকা তিনি দেখিয়েছেন। এটাও ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে আমরা প্রসিকিউশন পক্ষ আদালতে পেশ করি। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে ভবিষ্যতে যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার কেউ না করেন- আদালত রায়ে আজ এ বার্তা দিয়েছেন।
চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়াসহ মামলার অপর আসামি হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এ ট্রাস্টের নামে কাকরাইলের ৪২ কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণায় আইনের শাসনের প্রতিফলন ঘটেছে বলেও মন্তব্য করেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে না এসে আদালত অবমাননা করেছেন। তারা আইনের সব সুবিধা ভোগ করেছেন। তাদের উচিত ছিল আদালতে উপস্থিত হওয়া।
কাজল বলেন, আইন অনুযায়ী আজ থেকেই রায় কার্যকর হবে। পূর্বে যতদিন জেল খেটেছেন সেটাও কাউন্ট হবে, একটা ট্রাস্টের ঠিকানা কখনই ব্যক্তিগত ঠিকানা হতে পারে না।
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয় বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। কারা হেফাজতে বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ মামলায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার পক্ষে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হয়। এখন হাইকোর্টে আপিল শুনানি চলছে। আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আপিলটি নিষ্পত্তির নির্দেশনা রয়েছে।