বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : মানবতার কল্যাণে লায়ন্স-এর সেবা অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

662

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-লায়ন-লিও ক্লাব-ভাষণ
মানবতার কল্যাণে লায়ন্স-এর সেবা অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাজেট সাতগুণ বাড়িয়েছি। বাজেটের ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে আমরা করে থাকি। আগে আমাদের উন্নয়ন বাজেট যা হয়তো ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা ছিল, এখন সেখানে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
দেশের উন্নয়নে নেওয়া পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশকে আমরা সর্বক্ষেত্রে উন্নত করতে চাই, স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই। দেশের মানুষ যেন আরও উন্নত জীবন পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল এর প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল জাতিসংঘের কনসালটেটিভ স্ট্যাটাস প্রাপ্ত, বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবসেবা মূলক সংগঠন। সমাজের দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নিবেদিত এই সংগঠন বিগত একশ বছরের বেশী সময় ধরে বিশ্বের ২০০টিরও অধিক দেশে মানব সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।’
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের ওপর একটা বোঝা এসেছে, মিয়ানমারের শরণার্থীরা। প্রায় ১১ লাখ শরণার্থী আজকে আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৭১ সালে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আমাদের শরণার্থীদের কথা যখন স্মরণ করেছি তখন তাদের আশ্রয় না দিয়ে পারিনি।’
রোহিঙ্গা সংকটে কূটনৈতিক সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ঝগড়া করিনি, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনার মাধ্যমে চুক্তি সই করেছি। তারা রাজি হয়েছে নিয়ে যাবে, যদিও এখনো নিয়ে যাওয়া শুরু করেনি। তারপরও আমরা আলোচনা করে যাচ্ছি এদের ফিরিয়ে দিতে।’ শেখ হাসিনা বলেন, অরাজনৈতিকভাবে আজকে যে সমর্থন বাংলাদেশ পেয়েছে এবং সেই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের (মিয়ানমারকে) চাপ প্রয়োগ করছেন। আমরা আশা করি তাদের (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন বলেই আমরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব যেমন করতে পারছি, তেমনি বহি:বিশ্বের সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিযোগিতাতেও অবতীর্ণ হতে পারছি এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্ব দরবারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধারবাহিকতা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর মাত্র সাড়ে ৩ বছর জাতির পিতা হাতে সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে ৩ বছর একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত প্রদেশকে রাষ্ট্রে পরিণত করার। তিনি মাত্র ৯ মাসে আমাদেরকে একটি সংবিধান উপহার দিতে পেরেছিলেন। বাঙালি জাতিকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার প্রতিটি কাজের তিনি সে সময়ই ভিত্তিমূল গড়ে দিয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমার ভাবলে অবাক লাগে এত অল্প সময়ে তিনি একটি স্বাধীন দেশের জন্য এত কাজ তিনি কিভাবে করলেন?’
তিনি বলেন, আজকে যখন রাষ্ট্র পরিচালনা করছি তখন যখন দেখি প্রতিটি ক্ষেত্রই তিনি প্রস্তুত করে দিয়ে গেছেন। হয় আইন করে দিয়ে গেছেন, না হয় নীতিমালা করে দিয়ে গেছেন। একদিকে যেমন স্কুল-কলেজ, পুল-ব্রিজ, ভাঙ্গা অফিস আদালত সংস্কারে কাজ করেছেন, অন্যদিকে বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পথ দেখিয়ে গিয়েছেন এবং বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন অর্থনৈতিক নীতিমালা বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য পদ লাভেও তিনি কাজ করেন। যে কারণে তাঁর শাসনের মাত্র সাড়ে ৩ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা পেয়েছিল।
মিত্র শক্তিকে দ্রত ভারতে পাঠিয়ে দেয়া এবং ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি করে যাওয়া সহ এত অল্প সময়ে বিশ্বের কোন নেতার পক্ষে আর কোন দেশের এভাবে উন্নতি করা সম্ভব হয়েছিল কিনা তাঁর জানা নেই, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বাসস/এএসজি-এফএন/২০৫৪/কেএমকে