ক্রীড়াবিদদের পদচারণায় মুখরিত আবুল মাল ক্রীড়া কমপ্লেক্স

478

সিলেট, ৬ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : বাংলাদেশে যে ক’টি ক্রীড়া কমপ্লেক্স আছে তার মধ্যে সবচেয়ে আধুনিক ও সৃমদ্ধ ক্রীড়া কমপ্লেক্সটি সিলেটে অবস্থিত। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের নামানুসারে ২০১৬ সালে উদ্বোধন করা হয় এটি। যেখানে রয়েছে অত্যাধুনিক সুইমিং পুল, ফুটবল ও ক্রিকেট মাঠ, জিমনেশিয়াম, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, কাবাডি কোর্ট, লং টেনিস কোর্ট। এছাড়াও ছাত্র/ছাত্রীদের আবাসনের জন্য রয়েছে আবাসিক হোস্টেল।
ক্রীড়াঙ্গনের উর্বরভূমি খ্যাত সিলেট থেকে খেলোয়াড় তৈরি করার লক্ষ্যেই প্রায় সাড়ে ছয় একর জমির উপর নির্মিত হয়েছে ক্রীড়া কমপ্লেক্সটি। এর সুফলও পাচ্ছে সিলেট। ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ওই অঞ্চলের ফুটবলার, শাটলাররা এখন জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়াঙ্গনকে মাতিয়ে রাখছে। জাতীয় ক্রিকেট দলে এক সময় দারুণ দাপট ছিল সিলেটের ক্রিকেটারদের। এখন ফুটবল ও ব্যাডমিন্টনে চলছে ওই অঞ্চলের ক্রীড়াবিদদের দাপট।
জেমি ডে’র বর্তমান জাতীয় দলের স্কোয়াডেই রয়েছেন চার সিলেটি ফুটবলার। আর ব্যাডমিন্টন যেন একচেটিয়া সিলেটেরই। বর্তমানে জাতীয় ফুটবলারদেও মধ্যে আছেন বিপলু আহমেদ, মাসুক মিয়া জনি, মতিন মিয়া ও মাহবুবুর রহমান সুফিল। আর সর্বশেষ জাতীয় ব্যাটমিন্টনের একক খেতাব জয়ী শাটলার সালমান খানের বাড়ীও সিলেটে। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ের শাটলার গৌরব সিং, এনাম আহমেদদের বাড়ীও বৃহত্তর সিলেটে। এর আগে জাতীয় দলে খেলা ফুটবলার তকলিস, ওযাহেদ আহমেদ ও ইয়ামিন মুন্নাও সিলেট থেকে উঠে এসেছেন।
২৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত আধুনিক সুবিধা সম্বলীত অ্যাথলেট তৈরির কারখানাটি সারক্ষণ থাকে ক্রীড়াবিদদের পদচারনায় মুখরিত। ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতার, ব্যাডমিন্টন এবং উশুর ক্রীড়াবিদরা নিয়মিত অনুশীলন করেন এই ক্রীড়া কমপ্লেক্সেই।
সিলেট উপশহরের মাছিমপুরস্থ এ ক্রীড়া কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেই দেখা যায় মূল মাঠে কয়েক’শ ক্রীড়াবিদ ব্যস্ত ক্রিকেট ও ফুটবল খেলায়। এদের সবাই স্থাণীয় অধিবাসী। কিশোর-যুবক থেকে শুরু করে শিশুরা পর্যন্ত খেলায় ব্যস্ত যে যার মতো।
ক্রীড়া কমপ্লেক্সের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত জিমনেশিয়ামের ভেতরে রয়েছে তিনটি ব্যাডমিন্টন কোর্ট। সেখানে অনুশীলনে ব্যস্ত শাটলাররা। প্রতিদিন চারটি ব্যাডমিন্টন একাডেমির ছাত্র/ছাত্রীরা এখানে প্রশিক্ষণ নেন। একাডেমিগুলো হচ্ছে চৌকশ ব্যাডমিন্টন একাডেমি, রোটস ব্যাডমিন্টন একাডেমি, দুলাল ব্যাডমিন্টন একাডেমি ও ব্যাডমিন্টন হাউজ।
রাতের বেলায় শহরের অভিযাত শ্রেণীর লোকজন ফ্লাড লাইটের আলোয় ব্যাডমিন্টন খেলার সুযোগ পান এই কমপ্লেক্সে। উশুর খেলোয়াড়রা অনুশীলন করেন জিমনেশিয়ামের বাইরের একটি নির্ধারিত স্থানে।
পেশাদার খেলোয়াড়দের পাশাপাশি রয়েছেন সৌখিন ক্রীড়াবিদ। যারা মাসিক চুক্তিতে অত্যাধুনিক সুইমিং পুলে নিয়মিত অনুশীলন করার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে এজন্য অবশ্য তাদেরকে কিছু অর্থ ব্যয়ও করতে হয়।
অর্থ নেয়ার কারণও অবশ্য আছে। সুইমিং পুলটি চালু হবার পর সেখানে নিয়মিত সাঁতারুর অভাবে সেটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিল। ব্যবহার না হবার কারণে পুলটি এক পর্যায়ে শ্রী হীন হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত সেটি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয় জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদ সেলিম মনে করেন ভাড়া নেয়ার কারণে প্রাণ ফিরে পেয়েছে পুলটি। তিনি বলেন, এটি রক্ষণাবেক্ষণ করা ব্যয় বহুল হওয়ায় এতদিন এর পরিচর্যায় ভাটা পড়েছিল। এখন ভাড়ার ওই অর্থ দিয়ে পুলটি রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন পেশার মানুষ এখানে সাঁতার শেখার সুযোগ পাচ্ছে।’