নাব্যতা সংকটে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি চলাচল বন্ধ

368

মুন্সীগঞ্জ, ৬ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নাব্য সংকটে দেশের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া তাই এখন নানা বিড়ম্বনা। গেল দুই মাস ধরে ধীরে ধীরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুট ফেরি চলাচল সচল থাকলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। শনিবারও ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে শতাধিক ট্রাক।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ শাহ বরকত উল্লাহ জানান, নদীতে পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট এবং এর কাছের নতুন চ্যানেলেও একই সমস্যায় ফেরি চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হয়। আর যতটুকুই সীমিত আকারে চলছিল ড্রেজিংয়ের কারণে চ্যানেলে প্রবেশ করতে পারছে না ফেরি। তাই ঝুঁকি এড়াতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এ রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং চলছে। চ্যানেল ফেরি চলাচল উপযোগী হলেই ফের ফেরি চলাচল শুরু হবে বলেও তিনি জানান।
মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আরমান হোসেন জানান, নতুন করে আর কোন যান ঘাটে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। তবে যে যান বিশেষ করে ট্রাক আটকা পড়েছে, সেগুলোর নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, পানি কমে গেছে, তাছাড়া লৌহজং চ্যানেলে ড্রেজিং চলছে, ফেরি প্রবেশ করতে পারছে না। তাই শুক্র ও শনিবার এ দু’দিন ফেরি একেবারেই বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে রোববার থেকে ফেরি চলাচল শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে নাব্য সঙ্কটে দীর্ঘদিন ফেরি চলাচলে বির্পযয় দেখা দিয়েছে। নাব্য সঙ্কট নিরসনে ক্রমাগত ড্রেজিং করেও কোন লাভ হয়নি। কখনও ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরি চলাচল ছিল বন্ধ, আবার চালু হলেও ফেরি চলেছে সীমিত আকারে। রো রোসহ বড় ফেরিগুলো ছিল বন্ধ, আর ছোট ফেরিগুলো ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অর্ধেক যানবাহন নিয়ে নৌরুট পাড়ি দিয়েছে। এতে যাত্রী দুর্ভোগ ওঠে চরমে। বেশী ভোগান্তিতে পড়ে পণ্যবাহী ট্রাক চালক ও শ্রমিকদের। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌছতে না পারায় পরিবহন সেক্টরের সংশ্লিষ্টরাও আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। পরবর্তীতে গত শুক্রবার থেকে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং কার্যক্রমকে সহযোগিতা করতে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে সিনোহাইড্রোর ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং শুরু হয়। অত্যাধুনিক এ ড্রেজার দিয়ে চায়না চ্যানেলের এক প্রান্ত থেকে ড্রেজিং শুরু হয়। ড্রেজিং এখনও কার্যক্রম চলছে। এরই মধ্যে লৌহজং চ্যানেলে পানি আরো কমে যাওয়ায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান জানান, লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট ও বাইপাস চ্যানেলে ৯টি ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারণ কাজ চলমান রয়েছে। গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া ড্রেজিং কার্যক্রমে এ পর্যন্ত পলি অপসারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ঘনমিটার। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সর্বমোট ৩২ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হলে নাব্য সঙ্কট নিরসণ হবে। তিনি আরও বলেন, জরিপ কাজে কোন অবহেলা বা গাফিলতি ছিল না। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পদ্মায় মাত্রাতিরিক্ত পলি জমেছে। তাই বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিংয়ে পলি অপসারণ করেও নাব্য সঙ্কট দূর করা যাচ্ছে না।