বাসস দেশ-২৬ : বিচার প্রক্রিয়ায় শিশুদের প্রতি সংবেদনশীলতা একান্ত কাম্য : প্রধান বিচারপতি

359

বাসস দেশ-২৬
প্রধান বিচারপতি-উদ্বোধন
বিচার প্রক্রিয়ায় শিশুদের প্রতি সংবেদনশীলতা একান্ত কাম্য : প্রধান বিচারপতি
সিলেট, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিচার প্রক্রিয়ায় শিশুদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কোমলমতি শিশুদের বিচার অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এ বিচার প্রক্রিয়ায় শিশুদের প্রতি সংবেদনশীলতা একান্ত কাম্য। একটি ফুলও যেনো অকালে ঝরে না পড়ে সেদিকে বিচারকদের মনোযোগ দিতে হবে।’
প্রধান বিচারপতি আজ বুধবার বিকেলে সিলেটে শিশু আদালত কক্ষের উদ্বোধন শেষে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অন্যান্যেও মধ্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশের সুরক্ষা বিভাগের প্রধান জন লেইবি এবং সিলেট জেলা ও দায়রা জজ গোলাম মর্তুজা মজুমদার অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
কোন শিশু যাতে বিপথগামী না হয়, সেব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘এটি আমাদের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব। কারণ, কোন শিশু অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। পরিবেশ-পরিস্থিতিই শিশুদেরকে অপরাধী করে তুলে। কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের আশ্রয়ে এরা প্রবেশ করে অপরাধ জগতে এবং এ জগতের বিভিন্ন পর্যায়ে বিচরণ করে।’
তিনি শিশু আইন-২০১৩ সংশোধনের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘পৃথিবীতে কোন আইনই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। সব আইনের মধ্যেই কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে। একইভাবে শিশু আইন-২০১৩’র কিছু ত্রুটি রয়েছে। বিচারক ও বিশেষজ্ঞদের গবেষণাই এগুলো ইতোমধ্যে চিহ্নিতও হয়েছে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি আশা করবো- ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো দূর করে শিশু আইন-২০১৩ সংশোধন করা হলে শিশু আদালতের মামলাগুলো গুণগত মান বজায় রেখে নিষ্পত্তি সম্ভব হবে।’
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সিলেটের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘পুণ্যভূমি সিলেটে নবসংস্কারকৃত শিশু আদালত কক্ষ উদ্বোধনের এ ক্ষণটি বিচার বিভাগের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শিশু আদালতের বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’ এই সংস্কারে ইউনিসেফ বাংলাদেশ-এর সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতার জানান তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, শিশুরাই দেশ ও জাতির কর্ণধার। জাতির ভবিষ্যত অগ্রগতির নেতৃত্ব দিবে আজকের শিশুরা। তাদেরকে আদর্শ ও শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও মানসিক বিকাশে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শিশু কোর্ট কক্ষ নির্মাণ নিঃসন্দেহে দৃশ্যমান অগ্রগতি। অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে আমাদেরকে সদা সচেষ্ট থাকতে হবে।’
প্রধান বিচারপতি সিলেটে দু’বেলা বিচার কার্যক্রম পরিচালনার প্রশংসা করে বলেন, ‘আমাদের দেশে মামলাজট অনেক বেশি। এটি দূর করার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই দু’বেলা বিচার কাজ পরিচালনা করতে হবে।’
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিচারপতি খিজির আহমদ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার মো. জাকির হোসাইন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, সিলেটের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মো. লালা, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজ অব পুলিশ মো. কামরুল আহসান, সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের যুগ্ম দায়রা জজ তাসনিমা শারমিন এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
বাসস/সংবাদদাতা/জেডআরএম/২০২৫/কেএমকে