‘বিপিও’ খাতে বাংলাদেশের আয় প্রবৃদ্ধি একশত ভাগেরও বেশি : শিল্পমন্ত্রী

759

ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০১৮ (বাসস) : বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতে বাংলাদেশের আয় প্রবৃদ্ধি একশ’ ভাগেরও বেশি উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ২০২১ সাল নাগাদ আইসিটি খাত থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা আইসিটিখাত থেকে বছরে ১৮০ মিলিয়ন ডলার আয় করি। ২০২১ সাল নাগাদ এখাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিপিও শিল্পকে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় ও পরিচয় করিয়ে দিতে পারলে শুধু ৫ বিলিয়ন নয়, এখাতে আমাদের আয় দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ করার সুযোগ রয়েছে’।
বিপিও সামিট বাংলাদেশ-২০১৮ উপলক্ষে সোমবার বিকেলে সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব : বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং এর চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এই সেমিনারের আয়োজন করে।
দ্য বস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর জারিফ মুনিরের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিসিজি’র প্রিন্সিপাল নিতিন চান্দালিয়া। আরও বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. মহসিন-উল-হক। আইসিটি ও বিপিও খাতের কয়েকজন উদ্যোক্তারা সেমিনারে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
বিশ্বের ক্রমবর্ধমান শিল্পগুলোর মধ্যে ‘বিপিও’ খাত অন্যতম উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এখাতে বর্তমানে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির জন্য একটি নতুন সম্ভাবনা এনে দিয়েছে। ¯œাতক ডিগ্রিধারীদের বিরাট অংশকে বিপিও সেক্টরে কাজে লাগানো সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি লাভ করছে। অথচ আমাদের চাকরির বাজার সীমিত। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মাত্র ৩০ হাজার তরুণ কলসেন্টারসহ বিভিন্ন আউটসোর্সিং কোম্পানিতে কাজ করছে। আমাদের মেধাবী ও সৃজনশীল তরুণ প্রজন্মকে বিপিও শিল্পখাতে কাজে লাগাতে পারলে তারা একদিকে যেমন স্বাবলম্বি হবে, অন্যদিকে রাষ্ট্রকে আয়কর দেয়ার মত সক্ষম পেশাজীবী হিসেবে তৈরি হবে।’
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করে বলেন, ‘আমাদের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ জনগোষ্ঠি। সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় ১১কোটি। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ জনগোষ্ঠীর বয়স ৩৫ বছরের নিচে। এটি আমাদের জন্য একটি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট। এর উপযুক্ত ব্যবহার করে আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারবো’।
আমির হোসেন আমু বলেন, আইসিটি খাতে বিনিয়োগ বাড়লে আরও অধিক সংখ্যাক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ সুবিধার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মূল্যায়নে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। এর আগে আমরা নি¤œ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে আমরা শুধু তৃতীয় শিল্প বিপ্লব নয়, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফলও কাজে লাগাবো।’