বেরোবিতে সেমিনারে নদী রক্ষায় তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান

733

রংপুর, ১৬ এপ্রিল, ২০১৮ (বাসস) : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)’র হেয়াৎ মামুদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় গ্যালারি কক্ষে আজ সোমবার আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা দেশের নদ-নদী রক্ষায় তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নদী বিষয়ক ‘রিভারাইন পিপল’ সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত ‘নদী রক্ষায় তরুণদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার।
বেরোবি’র একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ‘রিভারইন পিপল’ এর আহ্বায়ক উমর ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও ’রিভারাইন পিপল’ এর পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর সার্বক্ষণিক সদস্য মো. আলাউদ্দিন, বেরোবি’র ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সাইদুল হক এবং সহযোগী অধ্যাপক ড. শফিক আশরাফ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ‘নদী দখলকারীদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। রংপুর বিভাগের সকল জেলা প্রশাসকদের সভা করে এ এলাকার সকল নদীর পাড়ের সমস্ত অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিতে নির্দেশনা দিয়েছি। এরই মধ্যে রংপুর নগরীর পার্ক মোড় এলাকার একটি স্থাপনার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা অনুযায়ী আমাদেরকে অবশ্যই নদী রক্ষা করতেই হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নদী কমিশনের কোন ব্যক্তি এমনকি চেয়ারম্যানও যদি নদীর স্বার্থ বিরোধী কাজ করেন- তাহলে তার বিরুদ্ধেও আপনারা (তরুনরা) শক্ত প্রতিবাদ করবেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যারা যুদ্ধে গিয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশের বয়স ত্রিশের নিচে ছিল। আমাদের নদী রক্ষার যুদ্ধেও তরুণদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর সার্বক্ষণিক সদস্য মো: আলাউদ্দিন বলেন, ‘তরুণদের হাত ধরেই একদিন নদী জেগে উঠবে।’
অধ্যাপক সাইদুল হক বলেন, ‘নদী হচ্ছে আমাদের মা। আমরা যদি মায়ের সেবা করতে না পারি তাহলে এ দেশটাকে রক্ষা করা যাবে না।’
ড. শফিক আশরাফ বলেন, ‘নদীও মুক্তিযোদ্ধা। মহান মুক্তিযুদ্ধে নদী আমাদের শত্রুর মোকাবিলা করতে সহায়তা করেছে।’
উমর ফারুক বলেন, ‘নদীকে জাগাতে হলে আগে নদী সম্পর্কে জানতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ড. তুহিন ওয়াদুদ বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক দেবেশ রায়ের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘মানুষ যদি নদীকে ভালোবেসে তার কাছে না যায়, তাহলে নদী ভয়াবহ রূপ নিয়ে মানুষের কাছে আসে। তাই নদীর প্রতি যতœশীল হওয়ার কোন বিকল্প নেই।’
উš§ুক্ত আলোচনা পর্বে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল ওদুদ নদী দখল দূষণ হলে সরকারের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে খবর পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি হটলাইন নম্বর চালুর দাবি জানান। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শআহাদৎ হোসন শামীম নদীপথগুলো সংস্কার করার দাবি জানান। নদী কমিশনের চেয়ারম্যান সবার দাবির সাথে সহমত জানান এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।
সবশেষে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান উপস্থিত সবাইকে নদী রক্ষার জন্য শপথ বাক্য পাঠ করান।