বাজিস-১ : জয়পুরহাটে পেয়ারা চাষে সফলতা পেয়েছে ময়নুল ইসলাম

312

বাজিস-১
জয়পুরহাট-পেয়ারা চাষ
জয়পুরহাটে পেয়ারা চাষে সফলতা পেয়েছে ময়নুল ইসলাম
জয়পুরহাট, ২৭ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : সরকারের আয় বর্ধনমূলক নানা কর্মসূচি দেখে উদ্বুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি প্রচন্ড ইচ্ছা শক্তি ও মনোবল থাকায় অল্প দিনেই সফল চাষি হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন ময়নুল ইসলাম। জেলার পাঁচবিবি উপজেলা সদর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে বড়মানিক গ্রাম। নিজস্ব অর্থায়নে ৭ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন পেয়ারা বাগান। পেয়ারা চাষ করে ময়নুল ইসলামের সফলতা দেখে এলাকার অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। পিতা আসাদ আলীর সংসারে তিন ভাই বোনের মধ্যে ছোট ময়নুল ইসলাম ২০০৫ সালে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এস ডিগ্রী অর্জন করেন। কৃষি ভিত্তিক কিছু করার প্রচন্ড ইচ্ছা থেকেই নাটোরের বন্ধু গোলাম মওলার পেয়ারা চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। ২০১৫ সালে ৫ হাত দূরত্বে ১ হাজার ৪শ’ পেয়ারার কলম চারা রোপণ করে নিজস্ব বাগান গড়ে তুলেন। চারা লাগানোর এক বছরের মাথায় ফল পাওয়া যায়। গত দুই বছরে সাড়ে ৭ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছেন। সব খরচ বাদে লাভ থেকেছে প্রায় চার লাখ টাকা। সর্বনি¤œ ১০ টাকা কেজি থেকে শুরু করে অফ সিজনে ৮০ টাকা কেজি পর্যন্ত পেয়ারা বিক্রি হলেও বর্তমানে বাজারে ৪৫/৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ময়নুল ইসলাম। একই সঙ্গে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহায়তায় ৬ শতাংশ জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ১০/১২ হাজার টাকার ড্রাগন ফল বিক্রিও করেছেন, গাছে এখনও ফল রয়েছে। লিচুর বাগানের সঙ্গে দেয়া বেড়াতে চাষ করেছেন লেবু। চারদিক থেকে যখন সফলতার হাত ছানি তখন খবর আসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরিও হয়েছে। বর্তমানে রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ময়নুল ইসলামের আনন্দের যেন শেষ নেই। পেয়ারার বাগানে কথা হয় ময়নুল ইসলামের সঙ্গে থাই-৩, ৪ ও ৫ জাতের পেয়ারার চারা লাগানো থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৫/৬ বার পেয়ারা তোলা সম্ভব হয়েছে। এখনো ছোট বড় প্রচুর পেয়ারা রয়েছে যাতে আরো ৩/৪ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন। বিশেষ করে শীতকালে পেয়ারার ডাল সিজন তখন ময়নুল ইসলামের পেয়ারা বাজারে আসবে আর এতে পাবেন উচ্চ মূল্য। স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি ঢাকা কাওরান বাজার থেকে পাইকার এসে বাগান থেকে সরাসরি পেয়ারা কিনে নিয়ে যান। বাগানে পেয়ারায় পলি ব্যাগ লাগানো, স্প্রে করা সহ নানা কাজে ৬/৭ জন লেবার সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। স্কুলে চাকরীর পরেই এসব বাগানে সময় দেন প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ করেন সেই মোতাবেক লেবারদের নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। স্থানিয় কৃষি বিভাগের তত্বাবধানে প্রদর্শনী হিসাবে ড্রাগন চাষ শুরু করেন ২০১৫ সাল থেকেই। দুই বছরের মাথায় ফল তোলা শুরু করেন। অত্যধিক খাদ্য গুণাগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা কেজি ড্রাগন ফল বিক্রিতে তেমন সমস্যা হয় না বলে জানালেন ময়নুল। বিভিন্ন ফলের সফল চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এলাকার যুব সমাজ। প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম ও মোশারফ হোসেন উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা জানান। সরকারের নানা আয় বর্ধনমূলক কাজের উৎসাহ থেকে স্বামী ময়নুল আসলামের কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছেন স্ত্রী নুসরাত জাহান রেশমা। সংসারে দুটি জমজ সন্তান জিসাদ ও রাফিয়াকে নিয়ে এখন সুখের সংসার ময়নুল ইসলামের। পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, সফল পেয়ারা চাষি ময়নুল ইসলামকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে।
বাসস/সংবাদদাতা/১০১০/বেউ/-নূসী