বাসস ক্রীড়া-৮ : পিএসজির হয়ে এমবাপ্পের তারকাদ্যুতিতে ঝলসে গেল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন

147

বাসস ক্রীড়া-৮
ফুটবল-ইউরো-চ্যাম্পিয়ন্স-বায়ার্ন-পিএসজি
পিএসজির হয়ে এমবাপ্পের তারকাদ্যুতিতে ঝলসে গেল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন
মিউনিখ (জার্মানি), ৮ এপ্রিল ২০২১ (বাসস/এএফপি): কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে ভর করে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে রোমঞ্চকর এক জয় পেয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে স্বাগতিক বায়ার্নকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে পিএসজি।
এই হারে আবসান ঘটল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের টানা ১৯ ম্যাচে অপরাজিত থাকার ধারাবাহিকতার। গত বছর টুর্নামেন্টের ফাইনালে দুই দলের মোকাবেলায় হেরে গিয়েছিল প্যারিস জায়ান্টরা। গতকাল ফের মুখোমুখি হয় দল দুটি। এবার আর পেরে উঠেনি বায়ার্ন। ফলে ২০১৯ সালের মার্চের পর ইউরোপীয় আসরে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পায় জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।
আলিয়াঞ্জ এ্যারেনার রুদ্ধদ্বার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের ২৮ মিনিটের মধ্যেই দুই গোলের লিড নিয়ে নেয় পিএসজি। এমবাপ্পে ও মারকুইনহোসকে দুটি গোলেই বলের যোগান দিয়েছেন ব্রাজিলীয় সুপার স্টার নেইমার।
হাঁটুর ইনজুরির কারণে ওই ম্যাচে বায়ার্নের হয়ে মাঠে নামতে পারেননি তাদের শীর্ষ গোলদাতা রবার্ট লিওয়ানদোাস্কি। তবে দৃস্টিনন্দন পারফর্মেন্স উপহার দিয়েছেন এরিক ম্যাক্সিম চুপ্পো -মোটিং ও থমাস মুলার। যদিও দক্ষতার প্রমান দিয়ে এমবাপ্পে নিজের দ্বিতীয় গোলটি আদায় করেন। এর মাধ্যমে প্যারিসের দ্বিতীয় লেগের আগে পিএসজিকে সুবিধাজনক অবস্থানেও পৌঁছে দিয়েছেন এই ফরাসি আন্তর্জাতিক।
খেলা শেষে এমবাপ্পে স্কাই স্পোর্টসকে বলেন,‘ আমরা আমাদের সবগুলো সুযোগেরই সদ্ব্যবহার করেছি। অবশ্য ভাগ্যও আমাদের সহায়তা করেছে। তবে এখনই সবকিছু নির্ধারিত হয়ে যায়নি।’ ম্যাচে দারুন দক্ষতার সঙ্গে বেভারিয়ানদের প্রতিহত করেছেন পিএসজির গোল রক্ষক কেইলর নাভাসও। এ সময় বায়ার্ন পোস্ট লক্ষ্য করে মোট ৩১টি শট নিয়েছে। বিপরীতে পিএসজি নিয়েছে মাত্র ৬টি শট।
মুলার বলেন,‘ আমাদের অনেকগুলো গোল করা উচিৎ ছিল। ম্যাচটি ৫-৩- বা ৬-৩ ব্যবধানে আমাদেরই জয় পাবার কথা। আমাদের সুযোগগুলো নিয়ে কারো কোন অভিযোগ থাকতো না। আমরা হারতে চাইনি। দলও সেরা খেলাটাই খেলেছে।’
এদিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেকর্ড ১৯তম কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে বায়ার্ন মিউনিখ। তবে শেষ বাঁশি বাজার পর তারা এটিকে সামন্যতম উদযাপনও করেনি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় পিএসজি। নেইমার স্বাগতিকদের রক্ষন ভেদ করে বল চালান করে দেন এমবাপ্পের উদ্দেশ্যে। ফরাসি ওই তারকার শটের বলটি বায়ার্নের গোল রক্ষক ম্যানুয়েল ন্যয়ারের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে জড়িয়ে যায় (০-১)।
এরপর পিএসজির ফরোয়ার্ড জুলিয়ান ড্রাক্সলারের একটি গোল বাতিল হয়েছে অফসাইডের কারণে। ওই সময় অফসাইডে ছিলেন এমবাপ্পে।
দ্বিতীয় গোল হজম করার আগে অবশ্য দারুন একটি গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছে বায়ার্ন। মিডফিল্ডার লিওন গোরেৎকার জোড়ালো হেডের বলটি লক্ষ্যভ্রস্ট হয়।
এর পরপরই ২৮ মিনিটে নেইমারের শটের বল ফাঁকায় পেয়ে যান থাকা মারকুইনহোস। তড়িৎ শট নিয়ে তিনি সেটিকে জালে জড়িয়ে দেন তিনি (০-২)।
বিররতির আগেই অবশ্য একটি গোল পরিশোধ করে দেয় বায়ার্ন। ৩৭ মিনিটে মুলারের ক্রসের বল দিয়ে নাভাসকে পরাস্ত করেন চুপ্পো -মোটিং (১-২)। এরপর নেইমারের একটি শট প্রতিহত করেন ন্যয়ার। এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার একটি শটের বলও গোল লাইন থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
ম্যাচের বয়স যখন ঘন্টার কাঁটায়, তখন দ্বিতীয় গোলটিও পরিশোধ করে দেয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ৬০ মিনিটে জসুয়া কিমিচের অসাধারন একটি ফ্রি কিকের বল জালে জড়িয়ে দেন মুলার (২-২)। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি স্বাগতিকদের। শেষ পর্যন্ত জার্মান ক্লাবকে পরাজয়ে ডুবিয়ে দেন এমবাপ্পে। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে তিনি বল নিয়ে বায়ার্নের ডিফেন্ডার জেরোমে বোয়াটেংকে কাটিয়ে জালে শট নিলে ২-৩ গোলে এগিয়ে যাবার সুযোগ পায় সফরকারী পিএসজি। এরপর মুলার ও আলাবা ফরাসি শিবিরে আগ্রাসন চালিয়েও তৃতীয় গোলটি শোধ করতে পারেননি।
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/স্বব