বাসস দেশ-৬২ : সিলেটে ১৯ লাখ মেট্রিকটন বোরো উৎপাদনের আশা

146

বাসস দেশ-৬২
সিলেট-বোরো-উৎপাদন
সিলেটে ১৯ লাখ মেট্রিকটন বোরো উৎপাদনের আশা
সিলেট, ৭ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : সিলেটের হাওরাঞ্চলে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনও হয়েছে। এই বছর বিভাগে ১৯ লাখ মেট্রিকটন চাল উৎপাদনের আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
গত ১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার হাওরে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা উৎসবের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দেখার-হাওরের আস্তমা গ্রামে হাইব্রিড ১২০৪ জাতের ধান কাটার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শুরু হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী ধান কাটা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সদরের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমানের পাকা ধান কাটার মধ্য দিয়ে এই বছরের বোরো উৎসব শুরু করেছেন। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় শনি হাওরে জিয়াউর ছাড়াও বহু কৃষক ধান কাটায় ব্যস্ত।
হাওর পাড়ের গোবিন্দশ্রী গ্রামের কৃষক সেলিম আখঞ্জী বলেন, চলতি বছরে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে হাওরাঞ্চলের কৃষক মনের আনন্দেই ধান ঘরে তুলতে পারবে।
এই উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ হাজার ৭৯০ মেট্রিক টন।
আগাম জাত ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের কর্মকর্তারা। জেলা ডিএই অফিসের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা (তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা) বিমল চন্দ্র সোম জানান, বন্যাপ্রবণ এলাকা হওয়ায় সিলেটে বিভিন্ন সময় আগাম বন্যায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এজন্য কৃষকরা হাওরে আগাম বোরো চাষ করতে শুরু করেছেন। হাইব্রিজ জাতের বীজ রোপনের কারণে এরই মধ্যে ধান পাকা শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহে শ্রমিকরা ধান কাটা শুরু করেছেন।
সিলেট জেলায় এই বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮২ হাজার হেক্টর। চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ১৭ হাজার ৮২৯ মেট্রিক টন। কৃষি কর্মকর্তা বিমল সোম আশা করছেন, বন্যা ও ঘুর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনধরনের ক্ষতি না হলে কৃষকরা ভাল ফলন ঘরে তুলতে পারবেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি চাল উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
সুনামগঞ্জে এই বছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ২৯৯ মেট্রিক টন। হবিগঞ্জে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৬৯০ হেক্টর। আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ১৮ হাজার ১৫১ মেট্রিক টন। মৌলভীবাজারে আবাদ হয়েছে ৫৬ হাজার ৩৩৮ হেক্টর। আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ২২ মেট্রিক টন চাল।
সবমিলিয়ে এই অঞ্চলে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩২৮ হেক্টর জমি। এর মধ্যে হাওরে ২ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৫ হেক্টর। মোট আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৮ মেট্রিক টন।
ডিএই সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারী বলেন, সিলেটে বোরো মৌসুমে সমচেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়। এই বছর আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। কৃষকদের নিয়মিত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে ধান কাটতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পাকা হলেই ধান কাটতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সরকার ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করেছে। তাই এবার ভাল ফলনের সঙ্গে ভাল দামও পাবেন কৃষকরা।
বাসস/সংবাদদাতা/২১২০/এমএবি