ঝিনাইগাতীতে তরমুুুজ চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি

379

শেরপুর, ৫ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : জেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকায় সম্প্রতি মাল্টা চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করার পর এবার সেই পাহাড়ি জমিতে চরাঞ্চলের ফসল হিসেবে পরিচিত তরমুজ ফলিয়ে তাক লাগিয়েছে আব্দুল বাতেন। সেই সাথে গারো পাহাড়ে এখন তরমুজের হাসি ফুটেছে। আব্দুল বাতেন তার মাল্টা বাগানের ভিতর কিছুটা সাথী ফসল এবং এর পাশেই আরো কিছু জমিতে মোট এক একর জমিতে এবারই প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে প্রায় ২ হাজার তরমুজের বীজ রোপণের মাধ্যমে শুরু করেছেন তরমুজ চাষ। ইতিপূর্বে তিনি গত বছর পরিক্ষামূলক ভাবে তরমুজের চারা লাগিয়ে সাফল্য অর্জন করায় তিনি এবার বাণিজ্যিক ভাবে এ তরমুজ চাষের চিন্তা করেন।
স্বাভাবিকভাবেই তরমুজ হচ্ছে চরাঞ্চলের ফল বা ফসল। এটা চরাঞ্চরের মাটির প্রকৃতি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। কিন্তু পাহাড়ি মাটিতে এর ফলন সম্ভব নয় বলে অনেকেই ধারনা করলেও শেরপুরের আব্দুল বাতেন দেখিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া ও মাটি চরাঞ্চলের মতো না হলেও কিছুটা মিল থাকায় এখানে তরমুজ চাষ করা সম্ভব। শেরপুর সীমান্তের গারো পাহাড়ি এলাকায় বেশির ভাগ স্থানে পানি শুন্যতার কারণে ধান চাষ হয়না বলেই চলে। যেসব স্থানে চাষ হয় সেখানে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। ফলে পানির খরচ দিয়ে ধান চাষে খুব লাভ নেই। এছাড়া কিছু স্থানে বিভিন্ন সবজির চাষ হলেও খরচে পোষায় না তাদের। তাই আব্দুল বাতেন এ এলাকার মানুষকে লাভ জনক ও কম খরচে এ তরমুজ চাষে আগ্রহ স্মৃষ্টির জন্য নিজের জমিতে এবার বাণিজ্যিক ভাবেই তরমুজ চাষ শূরু করেছে।
শেরপুর জেলা জজ আদালতের কর্মচারি আব্দুল বাতের তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইগাতি উপজেলার হলদি গ্রাম পাহাড়ি এলাকায় গত বছর ডিসেম্বর মাসে প্রায় ২ হাজার তরমুজের বীজ রোপণ করেন। বর্তমানে তরমুজের ফলন চোখে পড়ার মতো হয়েছে। আগামি এপ্রিল মাসে এ তরমুজ বিক্রির জন্য উত্তোলন করা হবে বলে জানালেন আব্দুল বাতেন।
আব্দুল বাতেন জানান, আমাদের এলাকার পাহাড়ি মাটি বেলে-দোয়াশ প্রকৃতির হওয়ায় আমি গত বছর ১৫ টি ট্রপিক্যাল ড্রাগন প্রজাতির তরমুজের চারা রোপণ করে সাফল্য পাওয়ায় এবার বাণিজ্যিক ভাবে এ তরমুজ চাষ করেছি। আমার পরিক্ষামূলক তরমুজ পরিপক্ক হওয়ার পর ভেতরের রঙ ছিলো টকটকে লাল এবং রস ছিলো বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু। প্রতিটি তরমুজের ওজন ১৫ থেকে ১৮ কেজি পর্যন্ত হয়েছিলো। এবার আমার ২ হাজার গাছের পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। আশা করছি এ তরমুজ গাছ থেকে আয় হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা। তরমুজের চারা বড় হয়ে ফলন আসা পর্যন্ত সামন্য কিছু পানি দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ি মাটির তলায় পানি না থাকলেও মাটির উপরি ভাবে পানির স্তর থাকায় পানি নিয়ে টেনশান করতে হয়নি। তবে ফলন আসার সময় কিছুটা পানি ও পরিচর্যা করতে হয়েছে মাত্র। এপ্রিল মাসেই এ তরমুজ উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করা হবে। এছাড়া তিনি তার মাল্টা বাগানের ভিতরেও সথিী ফসল হিসেবেও এবার বেশ কিছু তরমুজ গাছ রোপণ করা হয়েছে। ফলে জমির সল্পতাকে কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করেন আব্দুল বাতেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আব্দুল বাতেন এবার তার মিশ্র ফল বাগানের সাথে এক একর জমিতে চরাঞ্চলের ফসল তরমুজ আবাদ করে বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা তাকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর ও নানা ভাবে পরামশ্য এবং সহযোগিতা দিয়ে আসছি। যাতে অনাবাদি এ পাহাড়ি জনপদে তরমুজ চাষ করে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে পারে।