দশ বছরে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে

650

ঢাকা, ৩ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : সরকার দেশে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য অধিকতর ভাল ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করায় দশ বছরে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারী কোম্পানির সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ৩২১ টি জাপানি কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। অথচ ২০১০ সালে বাংলাদেশে মোট জাপানি বিনিয়োগকারি কোম্পারি সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৩টি। জাপানের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থা (জেট্রো) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জেট্রো’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইউজি আন্দো আজ বাসস’র সঙ্গে আলাপকালে বলেন, জাপানের বিনিয়োগকারিদের অধিক পছন্দের দেশগুলোর মধ্যে একটি বাংলাদেশ। জাপানি বিনিয়োগকারিরা বাংলাদেশে তুলনামূলক ভাবে সস্থায় শ্রমিক এবং ব্যাপক অভ্যন্তরীণ বাজারের সুযোগ লুফে নিয়ে তৈরি পোশাক শিল্প, বস্ত্র, আইটি এবং অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আ্যবের ঢাকা সফরের পর দিন দিন বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাপানি বিনিয়োগকারিদের দৃষ্টি কাড়তে বাংলাদেশ সক্ষম হয়েছে। ফলে বিপুল সংখ্যক জাপানি বিনিয়োগকারি বাংলাদেশে বিনিযোগ করতে এসেছে।
তিনি বলেন, জাপানের অনেক অবকাঠামো উন্নয়ন কোম্পানি মাতার বাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ জাপানের সরকারি উন্নয়ন (ওডিএ) সহায়তায় পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করার জন্য বাংলাদেশে এসেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাথাপিচু আয় বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা থাকায় অনেক জাপানি ব্যবসায়ি কোম্পানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। জাপানি ব্যবসায়িরা বাংলাদেশে উৎপাদন কারখানা স্থাপন, ক্রমবর্ধমান চাহিদার ভোগ্যপণ্য সরবরাহ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ভিত্তিক কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তারা বাংলাদেশে পাবলিক প্রাইভেট পাটনারশীপের (পিপিপি) অধিন বিভিন্ন প্রকল্পেও বিনিয়োগ করছে।
তবে জাপানের এই প্রতিনিধি বলেন, তার দেশের এবং অন্যান্য বিদেশের ব্যবসায়িদের জন্য বাংলাদেশে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। উদাহরন হিসাবে তিনি অবকাঠামো ও কর জটিলতার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি ট্যাক্স ও ভ্যাট ব্যবস্থায় দ্রুত সেবা নিশ্চিত এবং প্যারেন্ট কোম্পানি থেকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য বিদেশী লোন ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে জাপান উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে এবং দিন দিন এই অবদান বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগে জাপানি বিনিয়োগকারিদের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য সুশাসন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারির পর থেকে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা, সাংস্কৃতিক ও পাস্পরিক সফর বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও জাপান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সহায়তা প্রদান করায় এ দেশের বড় উন্নয়ন অংশীদার হচ্ছে জাপান।