বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫ (প্রথম কিস্তি) : দেশের মর্যাদাকে আরো উচ্চমাত্রায় নিয়ে যেতে আমাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

178

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫ (প্রথম কিস্তি)
শেখ হাসিনা-জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ-(প্রথম কিস্তি)
দেশের মর্যাদাকে আরো উচ্চমাত্রায় নিয়ে যেতে আমাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ২৫ মার্চ ২০২১ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উদযাপনের মধ্য দিয়ে দেশের মর্যাদাকে আরো উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আজ আমাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে এক টেলিভিশন ভাষণে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। তবে এই উদযাপন যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা-সর্বস্ব না হয়। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে আমাদের দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার নতুন করে শপথ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, সুবর্ণজয়ন্তীর এই শুভক্ষণে আমাদের শপথ নিতে হবে কেউ যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। দেশের গণতান্ত্রিক এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে। আসুন, সকল ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি।’ সরকার প্রধান বলেন, আমাদের বিগত ১২ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। গত মাসে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। গড় আয়ু, লিঙ্গ সমতা, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, নারী শিক্ষা, নারীর রাজনৈতিক অধিকার, নারী ও শিশু মৃত্যুহার, স্যানিটেশন, খাদ্য প্রাপ্যতা- ইত্যাদি নানা সূচকে বাংলাদেশ শুধু তার প্রতিবেশি দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে যায়নি, অনেক ক্ষেত্রে অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, আজকের এই উত্তরণের পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। দেশের ভিতরে-বাইরে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানা অপতৎপরতা চালিয়েছে। সে প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত আছে। কাজেই আমাদের সকলকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশবিরোধী সকল অপতৎপরতা রুখে দাঁড়াতে হবে।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা উল্লেখ কওে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে ছাত্রছাত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে, শ্রমিক কারখানা ছেড়ে, কৃষক লাঙল ফেলে, কামার, কুমার, জেলে তাঁদের কাজ ফেলে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সশস্ত্র বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাঙালি সদস্যরা পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে প্রতিরোধ সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন। জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সকলেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বলেন, একবার ভাবুন, আমরা আজ যে স্বাধীন দেশের মাটিতে আজ মুক্ত নিশ্বাস ফেলছি তা অর্জনে কত শত তরুণ অকাতরে প্রাণ দিয়েছেন? কত মা তাঁদের সন্তান হারিয়েছেন, কত বাবা তাঁদের পুত্র হারিয়েছেন, কত ভাইবোন তাঁদের ভাই হারিয়েছেন, কত স্ত্রী তাঁদের স্বামী হারিয়েছেন, সন্তানেরা বাবা হারিয়েছেন? কতশত মুক্তিযোদ্ধা পঙ্গু হয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন?
তাঁদের একটাই প্রত্যাশা ছিল এ দেশ স্বাধীন হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। সকলে মৌলিক অধিকার ভোগ করবে। আজকে আমরা তাঁদের সেই প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কন্ঠ মেলান, ‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে।/কে আছ জাগিয়া পূরবে চাহিয়া,/বলে ‘উঠ উঠ’ সঘনে গভীর নিদ্রামগনে।/হেরো তিমির রজনী যায় ওই,/ হাসে ঊষা নব জোতির্ময়ী-/নব আনন্দে, নব জীবনে,/ফুল্ল কুসুমে, মধুর পবনে, বিহগ কলকূজনে।/’
চলবে-বাসস/এএসজি-এফএন/২১০০/কেএমকে