চট্টগ্রামে করোনায় নতুন ২শ’ জন শনাক্ত

209

চট্টগ্রাম, ২০ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ২শ’ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর পাঁচটি ল্যাবে ১ হাজার ৮৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন ২শ’ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৬৯ জন এবং আট উপজেলার ৩১ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৭ হাজার ৪৪০ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৯ হাজার ৬১০ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৮৩০ জন। উপজেলা পর্যায়ে শনাক্ত ৩১ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ১৫ জন, রাউজান ও পটিয়ায় ৪ জন করে, চন্দনাইশে ৩ জন, লোহাগাড়ায় ২ জন এবং রাঙ্গুনিয়া, সীতাকু- ও বাঁশখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে জেলায় মৃতের সংখ্যা ৩৮৩ জনই রয়েছে। এর মধ্যে ২৮২ জন শহরের ও ১০২ জন গ্রামের। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৭৩ জনকে। ফলে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৯৮ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪ হাজার ৫৪৮ জন ও বাসায় থেকে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ্য হন ২৮ হাজার ৮৫০ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ১৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ৪৯ জন।
উল্লেখ্য, এ নিয়ে পর পর দু’দিন রোগীর সংখ্যা ২শ’ শনাক্ত হলো। ১৮ মার্চ ছিল ২১২ জন। এর আগে, দুই শতাধিক আক্রান্ত চিহ্নিত হয় ডিসেম্বর মাসে ৭ দিন এবং নভেম্বরে ৪ দিন। এ সময়ের সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটে ২৯ নভেম্বর, ২৯১ জন। তবে করোনাকালে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ আক্রান্ত শনাক্ত হয় গত বছরের ৩০ জুন, ৪৪৫ জন। সংখ্যা ও হারে চট্টগ্রামে করোনার সর্বনি¤œ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৬ ফেব্রুয়ারি। এদিন ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। এছাড়া, চলতি মাসের ১৯ দিনের মধ্যে ১২ দিন একশ’র বেশি বাহক ধরা পড়ে। সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয় ৬ মার্চ, ৬৩ জন। অথচ ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ধরা পড়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১১৩ জন। এ মাসে মাত্র দু’দিন রোগীর সংখ্যা শতক ছাড়িয়েছিল। জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছিল ৪ জানুয়ারি ১৬৫ জন। এ মাসে একশ’র বেশি বাহক শনাক্ত হয় ১১ দিন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৯৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে গ্রামের ৬ জনসহ ৫৩ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫০১ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ৬ জনসহ ৭০ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৩৯টি নমুনার মধ্যে শহরের ১৭ ও গ্রামের ১৫টিতে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১৭৭ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ৪০ ও ৫টি নমুনায় ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। শেভরনে ৪০ বাহকের ৪ জন এবং মা ও শিশু’র ৫ জনই গ্রামের বাসিন্দা।
তবে, এদিন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল, ইম্পেরিয়ালে হাসপাতাল ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ ঊর্ধ্বগতিতে শঙ্কিত স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি আজ বাসস’কে বলেন, ‘দিন দিন সংক্রমণের সংখ্যা ও হার বাড়ার প্রবণতায় আমরা উদ্বিগ্ন। সব মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া করোনার এ ঊর্ধ্বগতি রোধ করা যাবে না। মানুষ স্বউদ্যোগে না মানলে বাধ্য করে হলেও তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানানোর বিকল্প নেই।’
গতকাল ল্যাবভিত্তিক সংক্রমণ পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ, চমেকে ১৩ দশমিক ৯৭, চবি’তে ২৩ দশমিক ০২, শেভরনে ২২ দশমিক ৬০ শতাংশ, এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশুতে ১৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।