বাসস দেশ-৪৯ (লিড) : বঙ্গবন্ধুর জন্মশত-বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী উদাযাপন অনুষ্ঠান শুরু

158

বাসস দেশ-৪৯ (লিড)
সুবর্ণ জয়ন্তী-জন্মশত বার্ষিকী-উদযাপন (লিড)
বঙ্গবন্ধুর জন্মশত-বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী উদাযাপন অনুষ্ঠান শুরু
ঢাকা, ১৭ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : জাতি আজ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১০ দিনব্যাপী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত-বার্ষিকী এবং মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান শুরু করেছে।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, তাঁর সহধর্মিনী রাশিদা খানম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপের সফররত প্রেসিডেন্ট ইবরাহীম মোহম্মদ সোলিহ ও তার সহধর্মিনী ফাজনা আহমেদের সাথে এই উৎসবে যোগ দেন। এ সময় ১০০ শিশু-কিশোর সম্মিলিতভাবে জাতীয় সংঙ্গীত পরিবেশন করে।
এরপর শিশুরা এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মিলিত কণ্ঠে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও আরো কয়েকজনের কয়েকটি গান পরিবেশন করে।
বাংলাদেশের স্থপতির জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও অংশ নেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা ও জনপ্রিয় ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্ক ট্যালেই প্রথম দিনের এই আয়োজনে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন। প্যারেড গ্রাউন্ডে পবিত্র কুরআন ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ও বিভিন্ন বক্তৃতা প্রদর্শন করা হয়। এ সময় জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গীত শিল্পীরা শিশু শিল্পীদের সঙ্গে সম্মিলিত কণ্ঠে কবি কামাল চৌধুরী রচিত ও নবিক খানের সুরারোপিত মুজিব বর্ষের থিম সং ‘তুমি বাংলার ধ্রুবতারা ও বাংলার বাতিঘর’ পরিবেশন করেন। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাও তাদের সঙ্গে কোরাসে যোগ দেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ডায়াসে উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সাবেক মন্ত্রী ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, শেখ রেহানা এবং অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে ‘শ্রদ্ধা স্মারক’ উপহার দেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে চারটায় প্রধান অতিথি রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সস্ত্রীক অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান। সম্মানিত অতিথি মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ সস্ত্রীক পৌঁছলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৪.২৭ টায় ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী তাদের স্বাগত জানান।
প্রথম দিনের কর্মসূচি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আকর্ষণীয় আতশবাজি এবং লেজার শো প্রদশনের মাধ্যমে শেষ হয়।
‘ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছো জ্যোতির্ময়’, প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ের অডিও-ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা তুলে ধরা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যগণ, সংসদ সদস্যগণ, বিদেশি কূটনীতিক এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এ মধ্যে আজ ‘ভেঙেছ দুয়ার এসেছো জ্যোতির্ময়’ অনুষ্ঠিত হল। আগামীকাল ১৮ মার্চ ‘মহাকালের তর্জনী’, ১৯ মার্চ ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’, ২০ মার্চ ‘তারুণ্যের আলোকশিখা’, ২১ মার্চ ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’, ২২ মার্চ ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’, ২৩ মার্চ ‘নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’, ২৪ মার্চ ‘শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’, ২৫ মার্চ ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’ এবং ২৬ মার্চ ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’ অনুষ্ঠিত হবে।
দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় আজ ১৭ মার্চ, ২২ মার্চ এবং ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ১৭ মার্চ, ১৯ মার্চ, ২২ মার্চ, ২৪ মার্চ এবং ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। ৫ দিনের অনুষ্ঠানে বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধানগণ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আজকের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্, ১৯ মার্চ অনুষ্ঠানে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ অনুষ্ঠানে নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভা-ারী, ২৪ মার্চ অনুষ্ঠানে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন।
এই ৫ দিনের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে সীমিত আকারে ৫শ’ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানসহ অন্য ৫ দিনের অনুষ্ঠানমালায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারণকৃত বক্তব্য প্রদর্শন করা হবে। প্রত্যেক দিনের অনুষ্ঠান টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
আগামীকালের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ১৮ মার্চ অনুষ্ঠানে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন, ২০ মার্চ অনুষ্ঠানে ওআইসি’র সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আহমেদ আল-ওথাইমিন, ২২ মার্চ অনুষ্ঠানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা, ২৪ মার্চ অনুষ্ঠানে পোপ ফ্রান্সিস, ২৫ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং স্যু-কুয়েন এবং বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জাপানের তাকাশি হাওয়াকাওয়ার পুত্র ওসামু হাওয়াকাওয়া বক্তব্য রাখবেন।
অনুষ্ঠান বিকেল ৫টা ১৬ মিনিটে শুরু হবে এবং রাত ৮টায় শেষ হবে। প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৩০ মিনিটের বিরতি থাকবে।
বাসস/এএইচজে/অনু-কেএটি/২১৩২/আরজি