বাসস দেশ-১ : দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ : শেরপুরে চাষ হচ্ছে ৫শ’ হেক্টর জমিতে

179

বাসস দেশ-১
সূর্যমুখী-শেরপুর
দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ : শেরপুরে চাষ হচ্ছে ৫শ’ হেক্টর জমিতে
ঢাকা, ১৫ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : হলুদ রঙের নান্দনিক একটি ফুল সূর্যমুখী। দেখতে সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, তাই ফুলকে সূর্যমুখী বলে। সূর্যমুখী থেকে তৈরি তেলও পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ। বিশ্বেজুড়েই সূর্যমুখী তেলের চাহিদা এখন ব্যাপক। আমাদের দেশেও ক্রমশ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, সূর্যমুখীর তেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা খুবই কম এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই। এই তেল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বাসস জেলা প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সূর্যমুখী চাষের চিত্রটুকু তুলে ধরার প্রয়াসে ‘দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। আজ থাকছে শেরপুর জেলায় সূর্যমুখী চাষের চিত্র-
শেরপুরে সূর্যমুখী ফুলের চাষ অতীতে ছিলনা বললেই চলে। বিগত দুইবছর ধরে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন প্রদর্শনী ও কৃষি পূর্নবাসন কর্মসূচির আওতায় সূর্যমুখী চাষ শুরু হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে জানান, আমাদের বিভিন্ন কৃষি প্রণোদনা ও পূর্নবাসন কর্মসূচীর আওতায় সূর্যমুখী আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ বছর শেরপুর জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৫’শ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী আবাদের কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত দুই বছর ধরে শেরপুরের কৃষকদের কাছে সূর্যমুখী আবাদকে জনপ্রিয় করে তুলার জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছে। ধান, গম পাটের চেয়েও সূর্যমুখী চাষ একটি লাভজনক আবাদ। তিনি আরও জানান, এ আবাদে রোগ বালাই কম তাই থাকায় কৃষকদের উৎপাদন খরচ কম। সূর্যমুখী চাষে উৎপাদন খরচ মিটিয়েও প্রতি একর জমিতে প্রায় ১ লাখ বিশ হাজার টাকা লাভ সম্ভব। সূর্যমুখী ভোজ্য তেল হিসেবে সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এছাড়াও সূর্যমুখী বীজ সংগ্রহের পর গাছের ডালপালা জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
তিনি বলেন, শেরপুরে নকলা উপজেলাকেই আমরা সূর্যমুখী আবাদের জন্য কৃষকদের বেশী উৎসাহিত করছি। কারণ সেখানকার মাটি সূর্যমুখী চাষের উপযোগী। ফলে কৃষক লাভবান হয়। নকলা উপজেলার চন্দ্রকোণার কৃষক মো. জান্নাতুল ইসলাম বাদল জানান, আমি দুই বছর যাবত ৩৩ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। ভবিষ্যতে আরও অধিক পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।
বানেশ্বদী এলাকার কৃষক মো. হালিম মিয়া বলেন, আমি কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের অনুপ্রেরণায় এ বছর সূর্যমুখী আবাদ করেছি। চার মাসের মধ্যে এর ফল পাওয়া যায়। সূর্যমুখী ফুলের বীজ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করতে পারলে আমরা বেশি লাভবান হতাম। এজন্য কৃষি বপিনন ও সম্প্রসারণ বিভাগকে এগিয়ে এসে আমাদের সূর্যমুখী বাজারজাতকরণ সহযোগিতা করার উদ্যোগ নিলে আমরা আশার আলো দেখতে পেতাম এবং অন্যান্য কৃষকরা সূর্যমুখী ফুল চাষের দিকে আগ্রহবোধ করত।
বাসস/এনডি/বি.প্র./সংবাদদাতা/০৯০৫/কেজিএ