বাসস দেশ-১৮ : ডিএনসিসি এলাকায় এবার ২ লাখ ৩২ হাজার পশু কোরবানি হবে

335

বাসস দেশ-১৮
ডিএনসিসি-কোরবানি
ডিএনসিসি এলাকায় এবার ২ লাখ ৩২ হাজার পশু কোরবানি হবে
ঢাকা, ২০ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় এবার প্রায় ২ লাখ ৩২ হাজার পশু কোরবানি দেয়া হবে, যা গত বছরের তূলনায় ১১ হাজার বেশি।
ডিএনসিসি’র প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তফা আজ নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কোরবানির পশু জবাই করার জন্য ডিএনসিসি এলাকায় এবার ৫৪৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৩টি স্থানে নগরবাসীকে কোরবানি দেয়ার জন্য প্যান্ডেলসহ বিভিন্ন সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া কোরবানি করা যাবে এরকম ৩৫৬টি স্থান চিহ্নিত করা আছে।
রাস্তার উপর কিংবা ড্রেনের পাশে কোরবানি না করার জন্য বিশেষ সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোরবানির জন্য সর্বমোট ৮শ’ জন ইমাম ও ৫শ’ জন মাংস প্রস্তুতকারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
মেয়র বলেন, নগরবাসী যাতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বিঘেœ পবিত্র ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এবছর ডিএনসিসি’র আওতাধীন ১০টি পশুর হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো- মিরপুর গাবতলী গবাদি পশুর হাট (স্থায়ী হাট), উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমের ফাঁকা জায়গা, খিলক্ষেত ৩০০ফুট সড়ক সংলগ্ন উত্তর পাশ্বের বসুন্ধরা হাউজিং এর খালি জায়গা, খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদ নগর) পশুর হাট, ঢাকা পলিটেকনিক্যাল ইনষ্টিটিউটের খেলার মাঠ, মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়ক সংলগ্ন (বছিলা) পুলিশ লাইনের খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-৬, ওয়ার্ড নং-৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, মিরপুর ডিএইচএস সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বের সেতু প্রোপার্টি ও সংলগ্ন খালি জায়গা এবং উত্তর ময়নারটেক, শহীদ নগর, হাউজিং এর খালি জায়গা।
জামাল মোস্তফা জানান, জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য ৩ লাখ ৬৫ হাজার লিফলেট বিতরণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকিং, প্রতিটি মসজিদের ইমাম সাহেবদের মাধ্যমে নামাজের পরে ও জুমা’র খুতবার সময় কোরবানি পশু জবাই ও বর্জ্য অপসারণ বিষয়ে মুসুল্লিদের উদবুদ্ধকরণ করা হয়েছে। এছাড়া রেডিও, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ৫টি গাড়ির সাহায্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হচ্ছে।
তিনি জানান, কোরবানির পশু বর্জ্য অপসারণ এবং কোরবানির পশুর হাট সার্বক্ষণিক পরিষ্কার করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের আওতায় ডিএনসিসি’র সাড়ে ৯ হাজার জন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োজিত থাকবেন।
ঈদের দিন থেকে জবাইকৃত কোরবানির পশু বর্জ্য তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণ এবং কোরবানির পশুর হাটসমূহ দ্রুত পরিষ্কারের লক্ষ্যে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব বর্জ্যবাহী ট্রাক, ভারী যন্ত্রপাতি, ওয়াটার বাউজারের পাশাপাশি আউটসোর্সিং হতে অতিরিক্ত ট্রাক নিয়োজিত করা হবে। ঈদ উপলক্ষ্যে বর্জ্য পরিহন সক্ষমতা কমপক্ষে ১০ হাজার টনে উন্নীতকরণে প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ঈদের পূর্বের দিন থেকে ঈদের পরবর্তী ২ দিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য বর্জ্যবাহী ট্রাক ১৫০টি, পে-লোডার ৫টি, হুইল ডোজার ৩টি, বেকহো লোডার ৪টি, স্কিপ লোডার ৪টি, ডাম্প ট্রাক ১৯টি, পানির গাড়ি ১১টি, ট্রাক (আউট সোর্সিং) ৮০টি নিয়োজিত থাকবে বলে মেয়র জানান।
তিনি জানান, কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্বারা যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে পশু জবাইয়ের স্থানে ১১টি ওয়াটার বাউজার দ্বারা তরল জীবানুনাশক মিশ্রিত পানি স্প্রে-করা এবং বর্জ্য ব্যাগ, ব্লিচিং পাউডারসহ অন্যান্য পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্যবহৃত উপকরণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্জ্য ব্যাগ ৪ লাখ, ব্লিচিং পাউডার ৪০ হাজার কেজি, তরল জীবানুনাশক ১ হাজার লিটার, ফিনাইল ২০০ লিটার।
মেয়র বলেন, ল্যান্ডফিলে ঈদ-উল-আযহার অতিরিক্ত বর্জ্য পরিবেশসম্মত ডিসপোজাল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অতিরিক্ত যান-যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে ল্যান্ডফিলে বর্জ্য ড্রেসিং কার্যক্রমে ৬টি বুলডোজার, ৩টি চেইন এস্কাভেটর, ২টি লং আর্ম এস্কাভেটর ও ২টি হুইলডোজার নিয়োজিত রাখা হবে। প্রতিটি বাড়ি হতে দ্রুত বর্জ্য সংগ্রহ করার জন্য পর্যাপ্ত ভ্যান সার্ভিসের ব্যবস্থা রাখা এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে ভ্যানগাড়িতে করে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর ব্যবস্থা করা হবে।
প্যানেল মেয়র ঈদের দিন বেলা ২টায় উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে অস্থায়ী পশুর হাট থেকে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে আঞ্চলিক কার্যালয়, অঞ্চল-৩ (মহাখালী)-এ অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের টেলিফোন নম্বর ৯৮৩০৯৩৬। এছাড়া ৫টি আঞ্চলিক কার্যালয় ও ৩৬টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের অফিস কন্ট্রোল রুম হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়া দ্রুত বর্জ্য অপসারণ ও এ সংক্রান্ত সহযোগিতার জন্য কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম ছাড়াও নিচের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে -অঞ্চল-১ (উত্তরা) ০১৭১৭১০২০২৫; অঞ্চল-২ (মিরপুর) ০১৭১১৩১৩২৮৯; অঞ্চল-৩ (মহাখালী) ০১৯২৩১১৩৬৩৬; অঞ্চল-৪ (মিরপুর) ০১৭৩৩৮৯৫৫৩২; অঞ্চল-৫ (কারওয়ান বাজার) ০১৭১১৫৭৭৪৭৪।
প্যানেল মেয়র আলেয়া সারোয়ার ডেইজী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাহুল ইসলাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
বাসস/এএসজি/এমএসএইচ/২০১০/-কেএমকে