বাসস ক্রীড়া-২ : লিভারপুলের সাথে ড্র করে শীর্ষেই থাকলো ইউনাইটেড, দুইয়ে উঠে এলো সিটি

91

বাসস ক্রীড়া-২
ফুটবল-প্রিমিয়ার লিগ
লিভারপুলের সাথে ড্র করে শীর্ষেই থাকলো ইউনাইটেড, দুইয়ে উঠে এলো সিটি
লন্ডন, ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : লিভারপুলের সাথে হাই ভোল্টেজ ম্যাচে গোলশুন্য ড্র করে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান অক্ষুন্ন রেখেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দিনের আরেক ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ম্যানচেস্টার সিটি।
ওলে গানার সুলশারের দল কালকের ম্যাচে সুযোগ বেশী পেলেও ইংলিশ ফুটবলের দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বির লড়াইয়ে কার্যত কেউই জিততে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুল গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকার প্রতিপক্ষের ব্রুনো ফার্নান্দেস ও পল পগবাকে হতাশ করলে ইউনাইটেডের এগিয়ে যাওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত দু’দলকে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।
এই ড্রয়ে এক ম্যাচ কম খেলা সিটি ও তৃতীয় স্থানে থাকা লিস্টার সিটির থেকে দুই পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে থাকলো ইউনাইটেড। এই দুই দলের থেকে আরো এক পয়েন্ট কম নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল।
২০১৩ সালে এ্যালেক্স ফার্গুসনের অবসরের পর বড়দিনের পর টানান ১২ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েছে ইউনাটেড, এর মধ্যে রয়েছে ৯টি জয়।
গত আট বছরে প্রথমবারের মত মৌসুমের দ্বিতীয় ভাগে এসে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপার দাবীদার নিজেদের করতেই পারে লিভারপুল। যদিও সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় ইনজুরি আক্রান্ত লিভারপুলকে হারানোর একটি ভাল সুযোগ হাতছাড়া হওয়াতে কিছুটা হলেও হতাশ হতে হয়েছে সফরকারী রেড ডেভিলসদের। ম্যাচ শেষে ইউনাইটেড বস সুলশার বলেছেন, ‘আমরা যদি পরবর্তী ম্যাচটি জিততে পারি তবেই এই ফলাফলটা কাজে আসবে। আজ আমরা ভাল একটি সুযোগ হাতছাড়া করেছি। তারপরেও বলতে হবে বিশে^র অন্যতম সেরা দলের বিপক্ষে আমরা খেলতে নেমেছিলাম। আমি মনে করি আমরা ম্যাচের আবহ ধরে রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু দিনের শেষে জয়টা হাতছাড়া হয়েছে, কারন এই মুহূর্তে লিভারপুলের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দুটি বড় সুযোগ তৈরী করেও গোলরক্ষকের কারনে ব্যর্থ হয়েছি।’
এ নিয়ে প্রথমবারের মত ২০০৯ সালের পর পুরোনো দুই প্রতিদ্বন্দ্বী একইসাথে লিগ শিরোপা দৌড়ে একে অপরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। যদিও দর্শকশুন্য নি:শব্দ এ্যানফিল্ডে এই লড়াইয়ে কেউই নিজেদের এগিয়ে নিতে পারেনি। লিভারপুল তাদের দুর্দান্ত ফর্ম থেকে অনেকটাই দুরে ছিল। গত বছরের লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বিজয়ী দলটির থেকে এ ধরনের পারফরমেন্স কোনভাবেই কাম্য নয়।
এ নিয়ে জার্গেন ক্লপের দল টানা চারটি লিগ ম্যাচে জয়হীন থাকলো। সবচেয়ে শঙ্কার বিষয় হলো শেষ তিনটি ম্যাচে তারা কোন গোল করতে পারেনি। ক্লপ বলেছেন, ‘এখানে সহজ কোন ব্যাখ্যা দেবার কিছু নেই। আমরা সব সময়ই সুযোগ নষ্ট করেছি, এমনকি এই ম্যাচটিও আমাদের জেতা উচিত ছিল।’
এ্যানফিল্ডে ড্র’টা সিটির জন্য দারুন একটি ফলাফল ছিল। আর সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে টানা পঞ্চম লিগ জয় তুলে নিয়েছে সিটিজেনরা। ২৬ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার দুর্দান্ত ক্রস থেকে জন স্টোনস গোল করে সিটিকে এগিয়ে দেন। সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগে এই ডিফেন্ডারের এটিই প্রথম গোল। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এ নিয়ে টানা ১৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকা সিটির হয়ে ৫৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ইকে গুনডোগান। ৬৮ মিনিটে স্টোনস আবারো গোল করলে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৩-০। ৮৮ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে রাহিম স্টার্লিং সিটিকে বড় জয় উপহার দেন।
ম্যাচ শেষে সিটি বস পেপ গার্দিওলা বলেছেন, ‘আমরা ম্যাচে দারুন ছন্দে ছিলাম। এই জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গত কয়েক মৌসুমে আমরা যেভাবে খেলেছি অনেকটা সেভাবেই আজকের ম্যাচে খেলতে চেয়েছিলাম, এবং আমরা সফলও হয়েছি। চার গোলের এই জয়ে আমরা কোন ধরনের ভুল করিনি।
দিনের শুরুতে ব্রামাল লেনে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে ৩-১ গোলে পরাজিত করেছেন সফরকারী টটেনহ্যাম। আইভরি কোস্টের ডিফেন্ডার সার্জি অরিয়ারের গোলে ৫ মিনিটেই এগিয়ে গিয়েছিল হোসে মরিনহোর দল। বিরতির আগে হ্যারি কেনের গোলে ব্যবধান দ্বিগুন হয়। ইংলিশ অধিনায়কের মৌসুমে এটি ১৯তম গোল। ৫৯ মিনিটে ডেভিড ম্যাকগোল্ডরিক টেবিলের তলানির দলটির হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন। কিন্তু ৬২ মিনিটে ফরাসি মিডফিল্ডার টানগাই এনডোম্বেলের গোলে টটেনহ্যামের জয় নিশ্চিত হয়।
পঞ্চম স্থানে থাকা টটেনহ্যাম এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় টানা সাত ম্যাচে অপরাজিত থাকলো। ১৯৭৫ সালের পর ব্রামাল লেনে এটাই স্পার্সদের প্রথম জয়।
বাসস/নীহা/১৫১০/স্বব