গোমতীর চরে সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

888

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ৬ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : জেলায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের রেখা ফুটেছে। এবার সরিষার হলুদ ফুলে গোমতীরচরসহ বিভিন্ন স্থানের মাঠঘাট ছেয়ে গেছে। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা কৃষকদের।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, ১১ হাজার পাঁচশ হেক্টর জমিতে এবার সরিষার চাষ হয়েছে। গত বছর তা ছিল নয় হাজার পাঁচশ’ হেক্টর। আরো এক হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। কুমিল্লায় বারি- ৯,১৩,১৪,১৬,১৭ সম্পদ ও টরি সেভেন জাতের সরিষা চাষ হচ্ছে। বেশি চাষ হচ্ছে বারি-৯ জাতের সরিষা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুরাদনগর উপজেলায় সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে মাঠঘাট। দুরন্ত শিশুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছুটোছুটি করছে। মাঠে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সরিষার ফুলের চারপাশে মৌমাছির আনাগোনা বেড়ে গেছে। চান্দিনার উপজেলার নুরপুর গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, এবার এক একর জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। বেশ ভালো ফুল ধরেছে। আশা করা যায় ফলন ভালো হবে। মুরাদনগর উপজেলার বাবুটিপাড়া গ্রামের কৃষক রমিজ উদ্দিন বলেন, আমি এক একর জমিতে সরিষার চাষ করেছি। মাঠে বেশ ফুল ফুটেছে। আশা করছি ফলন ভালো হবে। সরিষায় অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও আবাদ করেছি।
বুড়িচং উপজেলার কৃষক খোকন জানান, ২০ বছর আগে সরিষা পুরো গোমতীর চরজুড়ে চাষ হতো। সে জায়গা দখল করেছে আলু, কুমড়া ও মিষ্টি আলু। তবে সরিষার তেলের চাহিদা বাড়ায় এবার এ ফসলের চাষ বেড়েছে। এবার ফসলের অবস্থা ভালো। শেষ পর্যন্ত এ অবস্থা থাকলে ভালো ফলন হতে পারে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক সুরজিত চন্দ্র দত্ত বাসসকে বলেন, কুমিল্লায় এ বছর এক হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। আরো এক হাজার হেক্টর জমিতে চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকের মাঝে ভালো মানের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। সাধারণত মাঘ ও ফালগুন মাসে কৃষকেরা ঘরে সরিষা তুলতে পারবেন।