বাসস ক্রীড়া-১০ : শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে খুলনাকে তিন উইকেটে হারাল চট্টগ্রাম

301

বাসস ক্রীড়া-১০
ক্রিকেট-বঙ্গবন্ধু-টি-২০-চট্টগ্রাম-খুলনা
শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে খুলনাকে তিন উইকেটে হারাল চট্টগ্রাম
ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর ২০২০ (বাসস) : শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে জেমকন খুলনাকে তিন উইকেটে পরাজিত করেছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। আজ মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে শেষ দুই ওভারের নাটকীয়তায় শেষ হাসি হাসে চট্টগ্রাম। এই সময় পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকা ম্যাচের শেষ বলে ছয় হাকিয়ে চট্টগ্রামকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন শামসুর রহমান শুভ।
জয়ের জন্য চট্টগ্রামের শেষ ১২ বলে দরকার ছিল ২৫ রান। শুভাগত হোমের করা প্রথম বলে ক্যাচ তুলেছিলেন নাহিদুল ইসলাম। কিন্তু কভারে দাঁড়িয়ে ক্যাচ ছাড়েন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরের চার বলে দুই ছক্কাসহ নাহিদুল তোলেন ১৪ রান। কিন্তু শেষ বলে বিলিয়ে আসেন উইকেট।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ৯ রান। শেষ ওভারে মুস্তাফিজ স্ট্রাইকিংয়ে এসে আল আমিনের বলের সঙ্গে ব্যাটের সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হলে ৫ বলের বিপরীতে প্রয়োজন হয় ৯ রানের। পরের বলটিকেই সীমানা ছাড়া করে ম্যাচে নতুন মোড় এনে দেন কাটার মাস্টার। এর পরের বল থেকে এক রান নিয়ে নন স্ট্রাইকিং এন্ডে চলে যান মুস্তাফিজ। তবে নিয়মিত ব্যটসম্যান শুভ একটি মাত্র রান নিয়ে ফের জায়গা বদল করলে শেষ দুই বলের বিপরীতে জয়ের জন্য তিন রানের প্রয়োজন হয় চট্টগ্রামের। এবার বলের সাথে ব্যাটের সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হন ফিজ। তবে স্থান পরিবর্তনের জন্য দৌড় লাগান তিনি। এ সময় তাকে রান আউটের সুযোগ পেয়েও বল উইকেটে লাগাতে ব্যর্থ হন খুলনার উইকেট রক্ষক। ফলে শেষ বলে দুই রানের প্রয়োজন পড়ে স্ট্রাইকিংয়ে ফেরা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠিত ব্যটসম্যান শুভ। এবার আর ভুল করেননি। আল আমিনের শেষ বলটি সিমানা ছাড়া করে দলকে পঞ্চম জয় এনে দেন তিনি। এই জয়ে শীর্ষস্থানে থাকা চট্টগ্রাম তাদের আসনকে আরো সংহত করতে সক্ষম হল। ছয় ম্যাচের ৫টিতে জিতে চট্টগ্রামের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট। অপরদিকে একটি ম্যাচ বেশী অর্থাৎ ৭ ম্যাচের চারটিতে জিতে ৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা তারকা সমৃদ্ধ খুলনা।
টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে গিয়ে শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে পড়ার পর শুভাগত হোমের ১৩ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিসে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে খুলনা। শুভাগতর ওই ইনিংস না খেললে আরও কঠিন পরিস্থিতে পড়তে হতো খুলনাকে। শেষ পর্যন্ত গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান সংগ্রহ করে খুলনা।
আগে ব্যাটিং করতে নামলেও খুলনার শুরুটা ভালোই হয়েছিল। কিন্তু দলীয় ৩৩ রানে শরিফুলের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন জাকির হাসান (১৫)। তাতেই ঘটে ছন্দপতন। দ্রুত পতন ঘটে জহুরুল ইসলাম, মাশরাফি বিন মোর্তাজা ও সাকিব আল হাসানের। আগের ম্যাচগুলোর মতো এই ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন সাকিব, খেলেন ১৬ বলে ১৫ রানের ইনিংস। জহুরুলের ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ২৬ রানের ইনিংস।
স্পিনের বিপক্ষে দ্রুত রান তুলতে চার নম্বরে ব্যাট হাতে পাঠানো হয়েছিল মাশরাফিকে। ৮ মাস ২২ দিন পর মাঠে নামা মাশরাফিরও দুর্ভাগ্য, রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। সাকিবের সোজা ব্যাটে খেলা শট রাকিবুলের হাতে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে, ক্রিজ থেকে বেরিয়ে থাকা মাশরাফি (১) হন রান আউট।
এরপর ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারানো খুলনাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ইমরুল-মাহমুদউল্লাহ জুটি। দুজন ৪৩ রান যোগ করলে ১০০ ছাড়ায় স্কোর। ইমরুল ২৩ বলে ২৪ রান করে বিদায় নেয়ার পর খেই হারান রিয়াদও। শরিফুলের বলে ক্লিন বোল্ড হওয়ার আগে ১৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন খুলনার অধিনায়ক। শেষ দিকে শুভাগত হোমের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ১৫৭ রান সংগ্রহ করে খুলনা। ১৩ বলে খেলেন অপরাজিত ৩২ রানের ইনিংস।
চট্টগ্রাামের বোলারদের মধ্যে ৩৪ রান খরচায় শরিফুল ৩ উইকেট সংগ্রহ করেন। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান ৩৬ রানে ২টি এবং মোসাদ্দেক হোসেন ২৩ রানে ও জিয়াউর ১৮ রানে ১টি করে উইকেট দখল করেন।
জবাবে লক্ষ্য তাড়ায় সাকিব ফেরান দুই ওপেনারকে। লিটন ৪ রানে ক্যাচ দেন রিশাদের হাতে। সৌম্য এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে ১৯ রানে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহর হাতে। মাঝে জয় ২৪ রান করে দলের স্কোরবোর্ড সচল রেখেছিলেন ঠিকই। কিন্তু শুভাগতর বলে বাজে শটে উইকেট উপহার দেন প্রতিপক্ষকে।
উইকেটে এসেই আল-আমিনকে দুই চার মেরেছিলেন মিথুন। কিন্তু অধিনায়ক পারেননি নিজের দায়িত্ব নিতে। হাসান মাহমুদের বলে এলবিডাব্লিউ হন ২৩ রানে। শেষ ৩০ বলে জয়ের জন্য ৫৩ রান লাগতো চট্টগ্রামের। শুভ দারুণ ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রাামকে এনে দেন জয়। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৫ রানের ইনিংসটি ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়। ফলে ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠে তার হাতে।
২টি করে উইকেট পেয়েছেন সাকিব ও শুভাগত। মাশরাফি, আল-আমিন ও হাসান মাহমুদের শিকার ১ টি করে উইকেট।
বাসস/এএসজি/এমএইচসি/২৩০৫/স্বব