চট্টগ্রামে নতুন করে ২২৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

250

চট্টগ্রাম, ২৬ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : চট্টগ্রামে নতুন করে ২২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংক্রমণ হার ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ। এ সময়ে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার শনাক্ত জীবাণুবাহকের সংখ্যা জুন মাসের পর একদিনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২৩ নভেম্বর সংখ্যা ও হার দু’ক্ষেত্রেই সংক্রমণ পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়। সেদিন ২৪২ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ছিল ১৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। তবে এদিন কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান ধারায় এর আগে ১৯ নভেম্বর ১৯৭ জন, ২৪ নভেম্বর ১৮৩ জন, ১৬ নভেম্বর ১৮১ জন, ১৮ নভেম্বর ১৭৮ জন, ও ১৭ নভেম্বর ১৫৭ জন ভাইরাসবাহক শনাক্ত হন। তবে গত ২৫ নভেম্বর ১০৬ জন ও ২২ নভেম্বর ৬৪ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, বুধবার নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ২২৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ। এতে শহরের বাসিন্দা ১৮৬ জন এবং আট উপজেলার ৩৭ জন। ফলে জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ২৪ হাজার ৩৮২ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ১৮ হাজার ২৮৬ জন ও বিভিন্ন উপজেলার গ্রামের ৬ হাজার ১১২ জন। উপজেলা পর্যায়ে বুধবার শনাক্ত ৩৭ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ১৩ জন, ফটিকছড়িতে ৯ জন, রাউজানে ৫ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৪ জন, সীতাকু- ও মিরসরাইয়ে ২ জন করে এবং বাঁশখালী ও সন্দ্বীপে ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু হয়। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৩১৮ জন। এর মধ্যে ২২৪ জন শহরের ও ৯৪ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৪৩৪ জনকে। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ২০ হাজার ৭৪৯ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ হাজার ৪৫১ জন ও বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ১৬ হাজার ৮৬৪ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৪৩ জন ও ছাড়পত্র নেন ৩৬ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১২৪৫ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৮৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে ৩৪ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে (সিভাসু) ২৭৩ জনের নমুনায় ৭১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৯৪টি নমুনার ৪৬টিতে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হলে ৭ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৭৫, শেভরনে ৪৯ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২৭ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ৩৪, ১৬ ও ১ জনের শরীরে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে।
চট্টগ্রামের ৫৭টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবক’টিরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, সিভাসু’তে ২৬, চবি’তে ৪৮ দশমিক ৯৪, চমেকে ১৫ দশমিক ২২, আরটিআরএলে ৫৩ দশমিক ৮৫, ইম্পেরিয়ালে ৪৫ দশমিক ৩৩, শেভরনে ৩২ দশমিক ৬৫ এবং মা ও শিশুতে ৩ দশমিক ৭০ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। কক্সবাজার মেডিকেলে এদিনও সংক্রমণ হার শূন্য শতাংশই ছিল।