দেশে করোনায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ১৭ জন, সুস্থ ১,৭০৯

455

ঢাকা, ২০ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৫৮তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭০৯ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ১৩ জন কম মৃত্যুবরণ করেছে। গতকাল ৩০ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৩২২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭০৯ জন। গতকালের চেয়ে আজ ২২৫ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৯৩৪ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩১ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮০ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৩ শতাংশ কম।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৬০৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৭৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৮৯ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৭ হাজার ৫৩১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৩৬৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের ১ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৬ লাখ ২২ হাজার ৫৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৯২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৫৯৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৮২৩ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ২২৮টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৬০৭ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৭ হাজার ৫৩১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৯২৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৬০৩ দশমিক ৭৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২১০৪ দশমিক ৬২ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৭ দশমিক ১২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ জন, আর নারী ৬ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৮৬৩ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪৫৯ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯২ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৭ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের বছরের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩০ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫০ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৫ জন; যা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩৪ জন; যা ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৭২ জন; যা ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৫৭ জন; যা ২৬ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৩৩৪ জন; যা ৫২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে ১ জন করে এবং রংপুর বিভাগে ২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৩৩ জন; যা ৫২ দশমিক ৭২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২২৮ জন; যা ১৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৮৫ জন; যা ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৮৪ জন; যা ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২১২ জন; যা ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬১ জন; যা ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৮৯ জন; যা ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩০ জন; যা ২ দশমিক ০৬ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫২৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৮৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৪৪১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২২১ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৮টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৭৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৯৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫১২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬৫২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৪টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪৫৯টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৭৭৩ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৬৮৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৯টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৪ জন এবং খালি আছে ২৬৫টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬০২টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৫টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭০৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ২৯৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৬৯ জন, রংপুর বিভাগে ৪৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩৬ জন, বরিশাল বিভাগে ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৫ জন, সিলেট বিভাগে ৩২ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৮৪২ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৭৫ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৬৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৩১ হাজার ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৫৪৩ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৯২ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৩৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৯ হাজার ৩০৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৯৮৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৩২৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৮৮৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ১১ হাজার ২৯৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৪০৭টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোন এসেছে ৩৮ হাজার ৯৮২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২২৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৬১৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৬ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩৮টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ২৫৮ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৩ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১ লাখ ৯৭ হাজার ৩১৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৯ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৫৯ লাখ ২৮ হাজার ৩২৭ জন এবং ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।