বাসস ক্রীড়া-৩ : রাশফোর্ডের হ্যাটট্রিকে লিপজিগকে উড়িয়ে দিয়েছে ইউনাইটেড

86

বাসস ক্রীড়া-৩
ফুটবল-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
রাশফোর্ডের হ্যাটট্রিকে লিপজিগকে উড়িয়ে দিয়েছে ইউনাইটেড
লন্ডন, ২৯ অক্টোবর ২০২০ (বাসস) : সুপার সাব মার্কোস রাশফোর্ডের দ্বিতীয়ার্ধের হ্যাটট্রিকে আরবি লিপজিগকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ওল্ড ট্যাফোর্ডের ম্যাচটিতে জার্মান লিগের শীর্ষে থাকা লিপজিগের বিপক্ষে প্রথমার্ধে প্রথম গোলটি অবশ্য করেছিলেন ম্যাসন গ্রীনউড। কিন্তু বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ১৮ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে রাশফোর্ড আরো একবার কোচ ওলে গানার সুলশারকে মনে করিয়ে দিলেন তিনিই দলের মূল স্ট্রাইকার। কাল স্কোরশিটে আরো নাম লিখিয়েছেন ফরাসী তারকা এন্থনি মার্শাল। ১৯৯৯ সালে নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ইউনাইটেডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন সুলশার। আর এখন এই তালিকায় দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখালেন তারই শিষ্য রাশফোর্ড।
প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইর বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলের জয়ের পর এ নিয়ে দ্বিতীয় জয়ে গ্রুপ-এইচ’এ দাপটের সাথেই শীর্ষে রয়েছে ইউনাইটেড।
ম্যাচ শেষে বিটি স্পোর্টসকে সুলশার বলেছেন, ‘মার্কোস রাশফোর্ড দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে দারুন করেছে। কিন্তু মূলত পুরো দলই আজ ভাল খেলেছে। লিপজিগও আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। সে কারনেই আমাদের প্রথম থেকেই এগিয়ে থাকার চেষ্টা করতে হয়েছে। আমাদের বেশ কিছু খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রাখতে হয়েছে। কারন মৌসুমটা এমনই, এখানে বড় ম্যাচগুলোর আগে বিরতি পাওয়া যাচ্ছেনা। সে কারনেই রোটেশন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হচ্ছে। বদলী বেঞ্চের খেলোয়াড়দেরও সব সময়ই প্রস্তুত থাকতে হচ্ছে। আর পারফরমেন্সের উন্নতিতে এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে।’
ঘরের মাঠে মৌসুমের প্রথম জয়ের লক্ষ্যে কাল বিস্ময়করভাগে মূল একাদশ থেকে বাদ পড়েছিলেন ফরাসী রাজধানীতে গত সপ্তাহের প্রথম ম্যাচের জয়ের নায়ক রাশফোর্ড ও ব্রুনো ফার্নান্দেস। তার পরিবর্তে মার্শালের সাথে আক্রমনভাগে জায়গা করে নিয়েছিলেন করোনভাইরস প্রোটোকল ভঙ্গের দায়ে ইংল্যান্ড জাতীয় দল থেকে গত মাসে বাদ পড়া গ্রীনউড। জুলিয়ান নাগেলসম্যানের দল শুরুটা ভাল করে স্বাগতিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু ইউনাইটেড দ্রুতই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয়। ২১ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে পল পগবার সহায়তায় গ্রীনউড বাম পায়ের জোড়ালো শটে লিপজিগ গোলরক্ষক পিটার গুলাসিকে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। এটি গ্রীনউডের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ক্যারিয়ারের প্রথম গোল। যদিও অফ-সাইডের সম্ভাবনায় গোলটি নিশ্চিতের জন্য ইউনাইটেডকে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হয়েছে। ভিএআর প্রযুক্তি অবশ্য রেড ডেভিলসদের হতাশ করেনি। গত মৌসুমের সেমিফাইনালিস্ট লিপজিগ এক গোলে পিছিয়ে থেকে শক্তিশালী ভাবেই ফিরে আসে। প্রথমার্ধের লম্বা সময় ধরে তারা ইউনাইটেডকে আর গোল করতে দেয়নি। শেষ মুহূর্তে ক্রিস্টোফার এনকুনকুর শট আটকে দিতে বাধ্য হন ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া।
বিরতির পর কিছুটা আগ্রাসী হয়ে খেলতে থাকে ইউনাইটেড। অন্যদিকে লিপজিগ খুব একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। যদিও ইব্রাহিমা কোনাটের হেড কোনমতে কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন ডি গিয়া। ম্যাচের আবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে অল্প সময়ের কিছু বিরতিতে সুলশার একে একে রাশফোর্ড, ফার্নান্দেস ও স্কট ম্যাকটোমিনেকে মাঠ নামান। আর তার ফলও সাথে সাথে পেয়ে যান সুলশার। ৭৪ মিনিটে ফার্নান্দেসের এসিস্টে দারুন এক গোলে রাশফোর্ড ব্যবধান দ্বিগুন করেন। লাইন্সম্যান অফ-সাইডের ঝান্ডা উঠালেও ভিএআর গোলের সুবজ সঙ্কেত দেয়। চার মিনিট পর রাশফোর্ড নিজের দ্বিতীয় গোল করলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৮৭ মিনিটে নিজের আদায় করা পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান বাড়ান ফ্রেঞ্চম্যান মার্শাল। স্টপেজ টাইমে মার্শালের সহায়তায় হ্যাটট্রিক পূরণ করতে কোন ভুল করেননি রাশফোর্ড।
মৌসুমের প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পাওয়া লিপজিগ বস নালেসম্যান বলেছেন, ‘এটা কিছুটা হলেও অস্বস্তির। কারন প্রথম গোলের পর আমরা ভালই খেলছিলাম। ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট ছিল একেবারেই ছন্দহীন।’
বাসস/এএসজি/নীহা/১৭১০/স্বব