দেশে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

361

ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ৩২ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ২১৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৮৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৪৮৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১১ হাজার ৯২২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪০৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ২৪ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৩৪ হাজার ২৫১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৬২ হাজার ৪৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬২৫ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৪৩ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৮২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ৬৯৮ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৭৬৯ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ২৮৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৪৮৫টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৬টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে
১২ হাজার ৮৬৯ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৯২২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৯৪৭টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২১২৫ দশমিক ৮৩ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৬০৭ দশমিক ০৯ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৬৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুুবরণকারী ২৬ জনের মধ্যে পুরুষ ২১ জন, আর নারী ৫ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৩৯ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১৮০ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ৬১ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২৫ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৭ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন; যা দশমিক ৪৬ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১৯ জন; যা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯৭ জন; যা ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৭৫ জন; যা ১২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৪০৯ জন; যা ২৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৬৫৩ জন; যা ৫০ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৬ জন, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন, খুলনা ও সিলেট বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৬০৭ জন; যা ৪৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৭৩ জন; যা ২০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৪১ জন; যা ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৩৫ জন; যা ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৭ জন; যা ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৩০ জন; যা ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৭ জন; যা ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৯ জন; যা ২ দশমিক ০৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪৬৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭০৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ১ হাজার ৭৫৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১২৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৫৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৭৯২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৯৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৩টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬৩৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬২৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯১ জন এবং খালি আছে ২৬৩টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৯৬টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫২৫টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪২টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৬২৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৭০৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩৫ জন, রংপুর বিভাগে ৬৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৪২ জন, বরিশাল বিভাগে ৭৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৯১ জন, সিলেট বিভাগে ৮৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২১৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৪৮৪ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ১৪২ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৯০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ২৫২ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭১৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৯৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩২ হাজার ৫১১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৩ হাজার ৮৮৬ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৩৮৮টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৭৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৫৬৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৩৭৬টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৫১০ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ৮ হাজার ৭১১ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ২১ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৭৯ হাজার ৯৭২ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ লাখ ১০ হাজার ৪৯৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৮৯৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯৮ জন এবং ৯ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।