দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

498

ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রন্ত হয়ে ২৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৫ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ৩১ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৭৫৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত তিনদিন ধরে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫১২ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৪০ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ৩৭২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৫৫ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ২১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৮১২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ হাজার ৯৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৭৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮৪৭ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৫০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৯৯৭টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ২১৬ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৯৯৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ২১৭টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ১৯৯২ দশমিক ৪৮ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৪২৭ দশমিক ৭৫ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৭ দশমিক ৯৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায মৃত্যুবরণকারী ২৬ জনের মধ্যে পুরুষ ২২ জন, আর নারী ৪ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৭০৮ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫১ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৯২ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২৫ জন হাসপাতালে ও ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৫১২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১৬২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩০৬ জন, রংপুর বিভাগে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে ২৩০ জন, বরিশাল বিভাগে ৮৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৩৯ জন, সিলেট বিভাগে ১৮৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন; যা দশমিক ৪৪ শতংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪১ জন; যা দশমিক ৮৬ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৯ জন; যা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৮৪ জন; যা ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬২০ জন; যা ১৩ দশমিক ০৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ২৯৯ জন; যা ২৭ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৩৮৫ জন; যা ৫০ দশমিক ১২ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন এবং রংপুর বিভাগে ১ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৩১২ জন; যা ৪৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৫ জন; যা ২১ দশমিক ১২ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৩২১ জন; যা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৪০১ জন; যা ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ১৮০ জন; যা ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ২১২ জন; যা ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ২২৬ জন; যা ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০২ জন; যা ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ১০৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৯২৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ১৭৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৭টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৪টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৬৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৬১৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৪ জন ও শয্যা খালি আছে ২৫টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ১০১ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ২৮৫টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৩টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ২৭৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ১৯৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ৮০টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৫ জন এবং খালি আছে ২৫২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫২৫টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৪১টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৪৩০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭১৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৭ হাজার ২০৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৩৬২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৮৪৭ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫২৩ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৭০১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ১৬ হাজার ৪৪১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৯ হাজার ৩৪৭ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৩৪টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ২৫৭টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৮৩টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৫৭৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯০৮টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৭৩৮ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৯ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৪১৪ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ২৯ হাজার ৩৪৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ৬২ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৯২ হাজার ৩৯১ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫২ জন এবং ৯ লাখ ১৭ হাজার ৪১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।