কুমিল্লায় পর্যটনশিল্প ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে

655

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, (বাসস) : জেলার ঐতিহাসিক  ্প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকা বছরজুড়েই নানা বয়সী দেশি-বিদেশি পর্যটক আর শিক্ষার্থীদের কোলাহলে মুখর থাকত। শুধুমাত্র শালবন বিহার আর ময়নামতি জাদুঘরই নয়, প্রাণচাঞ্চল্যময় থাকতো কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকার ঐতিহ্যবাহী লালমাই পাহাড় ঘিরে গড়ে ওঠা সরকারি  ্প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্কগুলোও। কর্মব্যস্ত থাকতেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ীরাও। কিন্তু গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিগত প্রায় সাড়ে ৫ মাস ধরে কুমিল্লার ‘পর্যটন নগরী’ খ্যাত কোটবাড়ি এলাকায় ছিলো না কোন কোলাহল। কর্মব্যস্ততা ছিলো না পর্যটন সংশ্লিষ্ট ক্ষুদে ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের। করোনাভাইরাসের প্রকোপে কুমিল্লার সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পর্যটন স্পষ্টগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে খুলতে শুরু করেছে জেলার সকল পর্যটন স্পষ্টগুলো। আর এর মাধ্যমেই করোনার প্রভাব কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
্প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয় সূত্র জানায়, কুমিল্লার লালমাই ও ময়নামতি পাহাড় এলাকায় অন্তত ২৩টি  ্প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উন্মোচিত হওয়া ১২টির মধ্যে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর থেকে সরকার রাজস্ব আয় করছেন। অন্যগুলো এখনো বিনা খরচে দেখতে পারছেন পর্যটকরা। শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর থেকে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছিল ১ কোটি ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮১৫ টাকা। আর করোনা মহামারির আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে ১৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪৫ টাকা এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৬ লাখ ২৩ হাজার ২৮০ টাকা রাজস্ব আয় হয়। এছাড়া মার্চ মাসের প্রথম ১৬ দিনে ৯০ হাজার ৩৯০ জন পর্যটকের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় হয় ১১ লাখ ১৫ হাজার ৮১৫ টাকা। ওই আড়াই মাসে সরকারের রাজস্ব আয় হয় ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৫৪০ টাকা। তবে করোনা মহামারির কারণে গত প্রায় সাড়ে পাঁচ মাসে এখান থেকে কোনো রাজস্ব আয় নেই সরকারের।
কুমিল্লা কোটবাড়ি এলাকার সালমানপুরে অবস্থিত ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক, কুমিল্লা নগরীর ঢুলিপাড়া এলাকার ফান টাউন পার্কসহ বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্কগুলোর উদ্যোক্তারা বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পার্কগুলো আবারও চালু হচ্ছে নতুন করে। এখন সকলেরই স্বপ্ন একটা, সেটা হলো আবারও ঘুরে দাঁড়ানো।
কুমিল্লা ভিক্টোরি ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদ পাটোয়ারি বাসসকে বলেন, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লার পর্যটন অনেক আগ থেকেই সমৃদ্ধ। কুমিল্লার পর্যটন স্পটগুলো থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেয়ে থাকে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া গেলে কুমিল্লার সরকারি-বেসরকারি পর্যটন খাত আবারো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে  ্প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক (কুমিল্লা কার্যালয়) ড. মো. আতাউর রহমান বাসসকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে আমরা কিছুদিনের জন্য থেমে গিয়েছিলাম। তবে আশা করছি সব কিছু ভালোভাবে শুরু করা গেলে, কুমিল্লার সরকারি-বেসরকারি পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলেই আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।