ভ্যাকসিন আনতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব শাখাই তৎপর রয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

496

ঢাকা, ২৪ আগষ্ট, ২০২০ (বাসস) : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেছেন, দেশে ভ্যাকসিন আনতে সরকারের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সব শাখাই তৎপর রয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছেন। বিশ্বে ভ্যাকসিন আবিষ্কার এখন আডভান্স লেভেলে আছে। যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, আমেরিকা, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চূড়ান্ত পর্যায়ে কাজ করছে। এই ভ্যাকসিনগুলোর গুণগত মান যাচাই-বাছাই করেই প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওয়ালটনের সহযোগিতায় তাইওয়ান এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার কর্তৃক কোভিড-১৯ মোকাবেলায় মেডিকেল সামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারও বক্তব্য রাখেন।
র‌্যাপিড টেস্ট পরীক্ষা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনায় তিন ধরনের পরীক্ষা বর্তমানে হয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে পিসিআর টেস্ট, এন্টিজেন্ট টেস্ট ও র‌্যাপিড এন্টিবডি টেস্ট। এগুলোর মধ্যে র‌্যাপিড এন্টিবডি টেস্ট করার ব্যাপারে এই মুহুর্তে কোন পরিকল্পনা নেয়া হয়নি। পিসিআর টেস্টের পাশাপাশি এন্টিজেন্ট টেস্ট শুধু সরকারি ল্যাবগুলোতেই করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
কোভিড মোকাবেলায় সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে সভায় তিনি বলেন, বাংলাদেশ সফল ভাবেই কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে যাচ্ছে। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হবার সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের বিমান, নৌ এবং স্থল বন্দরগুলোতে সময়মত স্ক্রীনিং এর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, তখন আমাদের পর্যাপ্ত মেডিকেল সামগ্রী ছিল না, যা ছিল তাই দিয়ে আমরা পরিকল্পিতভাবে এ মহামারি মোকাবেলা শুরু করি। দেশে স্পেশালাইজড হাসপাতাল ঘোষণা করে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখন হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা অনেক কম। এ সকল হাসপাতালে ৬০-৭০ ভাগ সিট খালি থাকছে। এখন আমরা স্পেশালাইজড হাসপাতালের সংখ্যা কমিয়ে সাধারণ চিকিৎসার জন্য খুলে দেয়ার চিন্তা করছি।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ সীমিত সম্পদ দিয়ে সঠিকভাবেই কোভিড-১৯ মোকাবেলা করছে। এখন প্রয়োজন মানুষের সচেতনতা। এ সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। শুরু থেকেই দেশের প্রচার মাধ্যমগুলো দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে আসছে। আগামীতেও তারা এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আমরা আমরা করি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় আমরা সফলভাবে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে যাচ্ছি জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ওয়ালটন স্বাস্থ্য সেবায় সরকারকে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। তাইওয়ানের এ সহযোগিতা আমাদের কাজে লাগবে। পৃথিবীর অনেক দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাত আরও উন্নত হবে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সকলকে চলতে হবে, এতে আমরা সকলেই নিরাপদ থাকবো।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, কোভিড-১৯ সারা দুনিয়ার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জীবনের ঝুকি নিয়ে ডাক্তার নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ এবং সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালন করছেন।
তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সাধ্যের সবটুকু দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা দেশের ৬৪টি জেলায় বিনা মাশুলে স্বাস্থ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। কলসেন্টার ও টেলিমেডিসিন ব্যবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করার সুযোগ সৃষ্টি এবং টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট অব্যাহত রাখার মাধ্যমে জীবনযাত্রা গতিশীল করার চেষ্টা করছি। করোনাকালেও গ্রামের মানুষটি পর্যন্ত উপলব্ধি করছে ডিজিটাল বাংলাদেশ না থাকলে বৈশ্বিক মহামারির এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের জীবনযাত্রা বিপন্ন হতো।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার ১ লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, ১৬০০ এ-৯৫ মাস্ক, ২০ হাজার কাপড়ের মাস্ক, ১০ হাজার ফেস ফিল্ড, ৫০০ পিপিই, ২০০ গগলস এবং ২ সেট ভেন্টিলেটর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হন্তান্তর করেছে।
সভায় বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. নূর-উর-রহমান বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও কম্পিউটার বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, ঢাকাস্থ তাইওয়ান এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক তিথমি ডব্লিউ ডি সো এবং ম্যানেজার রঞ্জন চক্রবর্তী।