বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি) : রাজধানীর চারদিকে এলিভেটেড রিং রোড় নির্মাণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

677

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-ইউ-লুপ উদ্বোধন
রাজধানীর চারদিকে এলিভেটেড রিং রোড় নির্মাণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি তাঁর সরকার রেল যোগাযোগ বৃদ্ধিতেও সমান গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যে যাতে চট্টগ্রামে পৌঁছানো যায় সে জন্য আমরা বুলেট ট্রেন (দ্রুতগামী ট্রেন) চালু করবো।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকা থেকে সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর, বরিশাল একেবারে পায়রা বন্দর পর্যন্ত এবং ঢাকা থেকে কলকাতা পর্যন্ত এই ট্রেন চালু করা হবে, যার ভেতর খুলনা ও কভার হবে।
শেখ হাসিনা বলেন ঢাকায় আর বেশি মানুষকে বসবাস করতে হবে না, দিনে দিনে কাজ সেরে যে যার গন্তব্যে যেন ফিরে যেতে পারেন সেই লক্ষ্য থেকেই এই পরিকল্পনা প্রণয়ন।
ঢাকার নৌযোগাযোগকে সম্প্রসারণে তাঁর সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা যেই চারটি নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত সেই নদীগুলোকে ড্রেজিং করে এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হবে। ছোট ছোট ব্রীজগুলো পুণনির্মাণ করে নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।
তিনি বলেন, সেই সাথে রাজধানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আরো উন্নত করে হাতির ঝিলের এই খাল এবং গুলশান, বনানীর খালগুলোর সঙ্গে সংযোগ খাল খনন করে নদীর সাথে সংযোগ করে দেওয়া হবে। যাতে এসব খালগুলোর পানি প্রবাহটা ভালো থাকে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় খাল বন্ধ করে বক্স কালভার্ট করার কারণেও রাজধানীতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম একটি কারণ উল্লেখ করে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসতে পারলে এসব কালভার্ট বন্ধ করে সেখানে খাল করে দিয়ে উপরে এলিভেটেড রাস্তা করে দেয়াও সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বক্স কালভার্টের কারণেই আমাদের জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আসলে বক্স কালভার্ট কোন সমাধান নয়। জানিনা আমরা যদি আবার সুযোগ পাই (সরকার গঠনের) তাহলে আমার পরিকল্পনা আছে- পান্থপথ যেখানে আগে খাল ছিল, সেখানকার বক্সকালভার্টগুলো ভেঙ্গে দিয়ে খালকে আবার উন্মুক্ত করে দেব, প্রয়োজনে খালের ওপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা তৈরী করে দেব।
বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যাবার এবং সেই পানিটা ধারণ করার জন্য খালগুলো উন্মুক্ত থাকা দরকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কেবল ঢাকার জন্য নয়, সমগ্র বাংলাদেশে যত খাল, বিল,নদী-নালা আছে, যত পুকুর আছে সবগুলো সংস্কারের প্রকল্প আমরা ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছি।
তাঁর সরকারের স্থানীয় সরকার, নৌ পরিবহন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় পর্যায়ক্রমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘এভাবেই সম্পূর্ণ বাংলাদেশ যাতে উন্নত হয়, পরিবেশ বান্ধব হয়, সেই ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি।’
সড়ক, নৌ,রেলপথের পাশাপাশি আকাশ পথের উন্নয়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপ সমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে উন্নত করে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। যাতে করে আমাদের সীমান্তবর্তী ভারতের ৭টি প্রদেশ এবং নেপাল ও ভুটান যেন এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। সেই ব্যবস্থা আমরা করে দেব। রাজশাহী এবং বরিশাল বিমানবন্দরকেও আমরা উন্নত করবো। আর কক্সবাজারে প্রতিষ্ঠা করা হবে সব থেকে দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দর। যেখানে বড় বড় বিমান অবতরন করতে পারবে।
তিনি বলেন,এর রানওয়ে ১১ থেকে ১২ হাজার মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে করে বিভিন্ন দেশের বিমান এখানে রি-ফুয়েলিংয়ের কাজটা করতে পারে।
তিনি বলেন, এক কথায় বাংলাদেশটাকে সুইজারল্যান্ড অব দ্যা ইষ্ট হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।
আগামীর বাংলাদেশ প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধ রচনা করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা এ সময় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বারোপ করে বলেন, আজকে জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল বলেই আমরা তাঁদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। একটানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আছি বলেই উন্নয়নের কাজগুলো করতে পেরেছি। আর আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যেন দেশটা আরো উন্নত-সমৃদ্ধ হয়।
তিনি বলেন,‘ নৌকা মার্কায় ভোট দিলে কেউ বঞ্চিত হয় না।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাতির ঝিল, কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভওয়ে নির্মাণ, পদ্মা সেতু নির্মাণসহ দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড সুচারুরুপে সম্পাদনে সহযোগিতা করায় বাংলাদেশ সেনবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি এ সময় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও উল্লেখযোগ্য হারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিদেশে দেশের সুনাম বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।
বাসস/এএসজি-এফএন/২১১৫/-আসচৌ