সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিচার শুরু

444

ঢাকা, ১৩ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
এর মধ্য দিয়ে মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হলো। আগামী ১৮ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আজ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।
আজ কারাগার থেকে বাবুল চিশতিকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া, জামিনে থাকা অপর দুই আসামি এ কে এম শামীম ও গাজী সালাহউদ্দিনও আদালতে হাজির হন। উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করে চার্জ গঠনের পক্ষে শুনানি করা হয়। অপর আট আসামি পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। গত বছর ৪ ডিসেম্বর কমিশনের সভায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) অনুমোদন দেয়া হয়। ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ। এরপর গত ৫ জানুয়ারি দুদকের দেয়া চার্জশিট আমলে নিয়ে বিচারপতি এস কে সিনহাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকে ভুয়া ঋণ সৃষ্টি করে সেই টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর, উত্তোলন ও পাচার করেছেন, যা দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ-৪-এ বদলির আদেশ দেন।
মামলায় বিচারপতি এস কে সিনহাসহ আট আসামি এখনো পলাতক।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হলেন।
আদালতে আত্মসমর্পণ বা গ্রেফতার করা না গেলে তাকে পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার কাজ চলবে। সাবেক এ প্রধান বিচারপতি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।