জুভেন্টাসকে হতাশ করে শেষ আটে লিঁও

175

তুরিন, ৮ আগস্ট ২০২০ (বাসস) : জুভেন্টাস ও বিশেষ করে দূরন্ত ফর্মে থাকা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে হতাশ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে ফরাসি ক্লাব লিঁও। শুক্রবার অধিনায়ক মেমফিস ডিপের পেনাল্টিতে তুরিনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত হয়েও শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে লিঁও। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম লেগের ম্যাচে ১-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল জুভেন্টাস। আর সেটাই শেষ পর্যন্ত জুভেন্টাসকে বিদায় করে দিতে যথেষ্ঠ ছিল। দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ গোলে সমতা থাকলেও এ্যাওয়ে গোলের সুবিধায় শেষ আটে গেছে ফরাসী ক্লাবটি। লিসবনে অনুষ্ঠিত শেষ আটের লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদকে পরাজিত করা ম্যানচেস্টার সিটি।
কালকের ম্যাচে জুভেন্টাসের হয়ে দুটি গোলই করেছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। লিঁও কোচ রুডি গার্সিয়া ম্যাচ শেষে রোনাল্ডোর সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমরা এমন এক দলের বিপক্ষে আজ জয়ী হয়েছি যে দলে একজন ‘বুদ্ধিমান এলিয়েন’ আছে।
তুরিনের আলিয়াঁজ স্টেডিয়ামে ম্যাচে ১২ মিনিটে ডিপের পেনাল্টিতে এগিয়ে গিয়েছিল লিঁও। এর ফলে গার্সিয়ার দল দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায়। এই গোল পরিশোধ করে নিজেদের লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনতে বেশ পেতে হয়েছে জুভেন্টাসকে। ম্যাচে জয়ী হয়ে শেষ আটে যেতে হলে তাদের তিন গোলের প্রয়োজন ছিল। পর্তুগীজ সুপারস্টার তার সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ৪৩ মিনিটে স্পট কিক থেকে রোনাল্ডো ম্যাচে সমতা ফেরান। এরপর ৬০ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল দিয়ে দলকে এগিয়ে দেন। কিন্তু তারপরেও পুরো দলের ব্যর্থতায় জুভেন্টাসের শেষ আট নিশ্চিত হয়নি। আগামী ১৫ আগস্ট পেপ গার্দিওলার সিটির সাথে শেষ আটে লড়াইয়ে মাঠে নামবে লিঁও।
গার্সিয়া বলেন, ‘আমি মনে করি প্রথমার্ধে আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। দূর্ভাগ্যবশত: তাদেরকে পেনাল্টি উপহার দেয়া হয়েছে যা একেবারেই অযাচিত ছিল। এর ফলে তারা ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ পায়। এটা পুরো দলের জয়। আমরা লিসবনের শেষ আট-এ খেলতে চেয়েছিলাম। এখন আমরা সেখানে যাচ্ছি। টুর্নামেন্টে আমরা এখনো ফেবারিট না, আর এটাই আমাদেরকে চাপমুক্ত রেখেছে।’
টানা নয়টি ইতালিয়ান লিগের শিরোপা জেতা সত্বেও জুভেন্টাস লিগ ওয়ানের সপ্তম স্থানে থাকা দলটির বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারলো না। জুভেন্টাস কোচ মরিজিও সারি বলেছেন, ‘প্রথমার্ধেই আমরা লিঁওর কাছে হেরে গিয়েছিলাম। আমি সত্যিই হতাশ, কিন্তু দলীয় পারফরমেন্সে সন্তুষ্ট। আমরা খুবই দু:খিত।’
পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী জুভেন্টাসের আক্রমনভাগে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রোনাল্ডো। নিজ দেশ পর্তুগালের মাটিতে ফাইনাল এইট খেলতে রোনাল্ডোর থেকে আর কারো হয়ত এত আকাঙ্খা ছিল না। রডরিগো বেনটানকার ডি বক্সের ভিতর হুসেম অয়ারকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় লিঁও। ওজিচেচ সিজিসনিকে পরাস্ত করতে কোন ভুল করেননি ডিপে। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রন অনেকটাই চলে যায় সারির শিষ্যদের কাছে। ১৯ মিনিটে ফেডেরিকো বার্নারডেশী লিঁওর রক্ষনভাগকে পরাস্ত করলেও গোলের দেখা পাননি। ২১ মিনিটে রোনাল্ডোর হেড অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। রোনাল্ডার কার্লিং ফ্রি-কিক লিঁও গোলরক্ষক এ্যান্থনি লোপেস রুখে দেন। বিরতির ঠিক আগে স্পট কিক থেকে শেষ পর্যন্ত সমতা ফেরান রোনাল্ডো। মিরালেম পিয়ানিকের ফ্রি-কিক ডিপের হাতে লাগলে পেনাল্টি উপহার পায় জুভেন্টাস। মিনিটখানেক পরেই লিওনার্দো বনুচ্চি জুভেন্টাসকে এগিয়ে দিতে ব্যর্থ হন।
ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে পাওলো দিবালা মাঠে নামলেও দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারেননি। থাইয়ের ইনজুরির কারনে এই আর্জেন্টাইনের খেলা নিয়ে শঙ্কা ছিল।