বাসস দেশ-৪১ : গঙ্গা অববাহিকায় পানির স্তর বেড়ে চলেছে

348

বাসস দেশ-৪১
গঙ্গা-পানি-বৃদ্ধি
গঙ্গা অববাহিকায় পানির স্তর বেড়ে চলেছে
রাজশাহী, ২৯ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : ভারী বর্ষণের ফলে উজান থেকে পানি প্রবাহের ফলে গঙ্গা অববাহিকার বেশিরভাগ নদীর পানির স্তর গত কয়েকদিন ক্রমাগত বেড়ে চলায় এই অঞ্চলের বন্যার পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।
গঙ্গা অববাহিকায় নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা মোট ৩০টি নদীর পয়েন্টে মধ্যে ১৫টি স্টেশনে পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১৩টি স্টেশনে পানির স্তর কমে গেছে এবং আজ সকাল ৯টায় দুই পয়েন্টে স্থিতিশীল রয়েছে।
তবে নদীগুলি ২২ পয়েন্টে বিপদসীমার নীচে প্রবাহিত হচ্ছিল এবং আজ সকালে সাত পয়েন্টে বিপদ সীমার উপরে রয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ডব্লিউডিবি) স্থানীয় কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুখলেছুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পাংখা, রাজশাহী এবং হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পয়েন্টগুলোতে পানি ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির প্রবণতা রেকর্ড করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখায় এবং হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে দুই সেন্টিমিটার (সিএম) বেড়েছে এবং রাজশাহীতে তিন সেন্টিমিটার এবং পদ্মা নদীর পয়েন্টে পানির স্তর পাঁচ সেন্টিমিটার পাঁচ হ্রাস পেয়েছে।
তবে গঙ্গা নদীর পাংখা, রাজশাহী এবং হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে যথাক্রমে ১৪৪ সেন্টিমিটার, ১৫৬ সেন্টিমিটার এবং ৭৫ সেন্টিমিটার নীচে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার অধীনে করতোয়া নদী ও যমুনা নদীর পানির স্তর আজ সকালে কমে গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি) নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, করাতোয়া নদীর পানির স্তর এক সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং চক রহিমপুরে ২৪ সেন্টিমিটার কমেছে। আজ সকালে দুটি স্টেশনে নদীর পানি যথাক্রমে ১৪৬ সেন্টিমিটার এবং ২৯ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল।
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদী ১৮ সেন্টিমিটার, সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে ২২ সেন্টিমিটার এবং সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার এবং নদীটি সারিয়াকান্দি, কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যথাক্রমে ৮২ সেন্টিমিটার, ৬২ সেন্টিমিটার ও ৬০ সেন্টিমিটার উঁচুতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নাটোর জেলার শিংরা পয়েন্টে গুর নদীর পানির স্তর এক সেন্টিমিটার কমে গেছে এবং পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়ি পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। তবে আজ সকালে পাঁচ সেন্টিমিটার নতুন করে কমে আসছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রোহনপুর পয়েন্টে মহানন্দা নদীর পানির স্তর আরও তিন সেন্টিমিটার কমে গেছে এবং নদীটি বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
নওগাঁর আত্রাই পয়েন্টে আত্রাই নদী এখনো বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাজশাহী বিভাগের অধীনে প্রায় আটটি জেলায় পর্যবেক্ষণ করা গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় ১৩টি নদী বিন্দুর মধ্যে তিনটি স্টেশনে পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে নয়টি স্টেশনে পানির স্তর কমে গেছে এবং এক পর্যায়ে স্থিতিশীল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে সম্ভাব্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য বাসসকে বলেন, বিভাগের ১৬টি উপজেলায় ১০১টি বন্যা কবলিত ইউনিয়নে ৬৫৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এছাড়া বগুড়া জেলায় ১৭টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিরাজগঞ্জের ৫০টি ইউনিয়ন, পাবনায় ১৯টি, বগুড়ায় ১৭টি, নওগাঁ ১০টি এবং নাটোর জেলার পাঁচটি ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ১৩ জনে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জে নয় জন এবং নওগাঁয় দুইজন মারা গেছে। সিরাজগঞ্জে দুই জন সাপের কামড়ে মারা গেছে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মইনুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম আরো জোরদার করেছে।
বাসস/এএইচ/এসই/২১৩৫/এবিএইচ