বাসস দেশ-৪৫ : চট্টগ্রামের উ. কাট্টলী রেড জোন থেকে এখন ইয়েলোতে

400

বাসস দেশ-৪৫
চট্টগ্রাম-করোনা
চট্টগ্রামের উ. কাট্টলী রেড জোন থেকে এখন ইয়েলোতে
চট্টগ্রাম, ৭ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : টানা ২১ দিনের লকডাউন শেষে রেড জোন থেকে ইয়েলো জোনে নেমে এসেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড। সংক্রমণের পরিসংখ্যানে ৪১ওয়ার্ডের মধ্যে দ্বিতীয় নম্বরে থাকা এ ওয়ার্ড এখন সর্বনি¤œ তালিকার ৬টি ওয়ার্ডের একটি। তালিকার এক নম্বরে ছিল চকবাজার ওয়ার্ড।
তথ্য-পরিসংখ্যান এবং বাস্তবায়নকারী কমিটির দায়িত্বশীল তিন জন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এবং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর সাথে আলাপকালে তারা এ তথ্য জানান। গত ১৬ জুন থেকে আজ ৭ জুলাই পর্যন্ত একটানা ২১দিন লকডাউন চলে এ ওয়ার্ডে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৬ জুন লকডাউন শুরুর আগে এ এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৪ জন। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে, জনসংখ্যার অনুপাতে যা লাখে ১৪৫ জন। লকডাউন শুরুর পরে প্রথম ১৪ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১ জন। ২১ দিনশেষে আজ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ১৮ জন, যা লাখের হিসেবে ২৫।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঞ্জু বাসসকে জানান, এ ১৮ জনের মধ্যে ২ জনের রিপোর্ট ইতোমধ্যে নেগেটিভ এসেছে। ১৫ জন হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং তারাও সুস্থতার পথে। একজন হাসাপাতালে ভর্তি আছেন।
এদিকে, সমাপনী দিন উপলক্ষে আজ সকালে সিটি গেট সংলগ্ন সুজানা স্কয়ারে খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল শেষে মেয়র আ জ ম নাছির সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বলেন, চট্টগ্রামের প্রথম ওয়ার্ড হিসেবে উত্তর কাট্টলীতে লকডাউন বাস্তবায়নের কাজটি চ্যালেঞ্জিং ছিল। স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে চসিকের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে লকডাউন চলাকালে সংশ্লিষ্টরা সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেজন্য সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, এলাকাটি আবাসিক এবং এখানে গার্মেন্টসসহ ছোট-বড় শিল্প ও কলকারখানা রয়েছে। তাই প্রথমদিকে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে দুই-একদিন পর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকরা এলাকাবাসীর চাহিদা এবং দৈনন্দিন চাওয়া পাওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সেবা দিতে সচেষ্ট হওয়ার পর একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
তিনি বলেন,লকডাউন চলাকালে এখানে কোনো দরিদ্রকে অভুক্ত থাকতে হয়নি। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার মানুষের জন্য খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী এলাকাবাসীকে চিকিৎসাসেবাও দেয়া হয়েছে। করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য বুথ ও রোগী পরিবহনের জন্য সার্বক্ষণিক এম্বুলেন্স সেবাও চালু ছিল।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বাসসকে বলেন, উত্তর কাট্টলীতে লকডাউনের ফলাফল সন্তোষজনক। এটি আমাদেরকে নতুন করে চিন্তার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, নতুন এসেসমেন্ট করে তালিকা ঢাকায় পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে ক’টি এলাকায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত দেবে চসিকের সাথে বসে বাস্তবায়নের এলাকা নির্ধারণ করা হবে।
কাউন্সিলর মঞ্জু বলেন, আমাদের বিবেচনায় সংক্রমণের হার বর্তমানে এক-দশমাংশে নেমে এসেছে। ২১ দিনের অনুশীলনে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা বেড়েছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এলাকাভিত্তিক লকডাউনের এ সিদ্ধান্ত আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অত্যন্ত সময়োপযোগী।
পাশাপাশি সব দিক সামাল দিয়ে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ২১ দিনের লকডাউন বাস্তবায়ন করেছেন বলে জানান তিনি।
বাসস/জিই/কেএস/কেসি/২০৪৪/এবিএইচ