ভোলায় লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অধিক জমিতে আউশ আবাদ সম্পন্ন

769

ভোলা, ৫ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অধিক জমিতে আউশের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। এবছর ৯৭ হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদের টার্গেট থাকলেও আবাদ হয়েছে ৯৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ১ হাজার ৫৩২ হেক্টর বেশি। অন্যদিকে গত বছরের চাইতে এবছর ১৫ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আউশের চাষ হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা’র প্রভাবে যাতে দেশে খাদ্য সংকট সৃষ্টি না হয় সে কারণে এবার আবাদি জমির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানায়।
এছাড়া আউশ আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করতে জেলায় ১৭ হাজার প্রান্তিক কৃষকের মাঝে উন্নত বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে প্রত্যেককে ৫ কেজি উচ্চফলনশীল জাতের বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। নির্ধারিত জমি থেকে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫১১ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট আউশের মধ্যে উচ্চ ফলন শীল (উফশী) রয়েছে ৮২ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমি, স্থানীয় ১৬ হাজার ১২৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, আউশ ধানের চারা রোপনের জন্য মোট বীজতলা করা হয়েছে ৫৫৩ হেক্টর জমিতে। এবছর পোকা-মাকর দমনে রাসয়নিক কীটনাশক ব্যবহারের বিপরীতে পার্চিং ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার অনেক বেড়েছে। আগামী আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে শুরু করবেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বাসস’কে জানান, জেলার মোট আউশ আবাদের মধ্যে উফশীর আবাদ সবচে বেশি হয়েছে। কারণ ১ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আউশ আবাদ করলে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টন ধান উৎপাদন হয়। অপরদিকে সমপরিমাণ জমিতে উফশীর আবাদ করলে ৫ থেকে সাড়ে ৫ টন ধান হয়। কাজেই বর্তমানে জেলায় উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাতের আউশ বেশি হচ্ছে।
উপজেলা সদরের কাচীয়া ইউনিয়নের কোরার হাট গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, আলী আকবর, বরকত আলী ও কাশেম সিকদার বলেন, তারা ৫ একর জমিতে আউশের আবাদ সম্পন্ন করছেন। জমিতে পোকা-মাকড় দমনে পাচিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ সেবা পাচ্ছেন। আশা করছেন ভালো ফলনের মাধ্যমে তারা লাভবান হবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হরলাল মধু বাসস’কে বলেন, গত বছর এই জেলায় ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হলেও এবার তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে যাতে দেশে খাদ্য সংকট দেখা না দেয় সে ব্যাপারটা আমাদের মাথায় রয়েছে। একইসাথে এবার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০০ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে চাষীরা ব্যাস্ত সময় পার করছে আউশের যতেœ।
তিনি আরো বলেন, এবছর আমাদের শতভাগ জমি পাচিং পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। চারা রোপন, সুসম মাত্রায় সার প্রয়োগসহ সব ধরনের পরামর্শ কৃষকদের দেয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এই অঞ্চলে আউশের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার কথা বলেন তিনি।