বাসস দেশ-৪১ : জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সমন্বয় করে কাজ করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও মেয়ররা

358

বাসস দেশ-৪১
সিআরআই-প্যানডেমিক
জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সমন্বয় করে কাজ করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও মেয়ররা
ঢাকা, ২৮ জুন, ২০২০ (বাসস) : স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরিতে জনপ্রতিনিধিদের গৃহীত পদক্ষেপ : বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকের ৭ম পর্বে বক্তারা বলেছেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সমন্বয় করে কাজ করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনের মেয়ররা।
শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’-এর সপ্তম পর্বের আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
এবারের পর্বের আলোচ্য বিষয় ‘জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার’ যেখানে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা এই সংকটে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি, স্বাস্থ্যবিধি পালনে উদ্বুদ্ধ করা, জলাবদ্ধতা নিরসন, জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আরও আলোচনা করা হয়, ডেঙ্গু নিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নকল স্বাস্থ্য উপকরণ বন্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ফেসবুক কমেন্টের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি তাদের প্রশ্নগুলো আলোচকদের কাছে তুলে ধরা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ও আওয়ামী লীগের কর্মকান্ড নিয়ে তাদের ভাবনা ও প্রত্যাশা সরাসরি জানানোর সুযোগ সৃষ্টির জন্যই ‘বিয়োন্ড দ্যা প্যানডেমিক’ নামে আলোচনা অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে।
বরাবরের মতোই পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/awamileague.1949 এবং অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে https://www.youtube.com/user/myalbd| একই সাথে সম্প্রচারিত হয়েছে বিজয় টিভির পর্দায়, সমকাল, ইত্তেফাক ও বিডি নিউজের ফেসবুক পেইজে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান (লিটন), নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি বলেন, সামাজিক পরিবর্তনের জন্য এবং মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরনের জন্য যে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন দ্বায়িত্ব পালন করতে পারে সেটা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা। যদি জনপ্রতিনিধিদের কে তাদের স্বীয় দ্বায়িত্বটি পালনের জন্য আমরা সক্ষম করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশকে ব্যপক উন্নতি করা অসম্ভব কিছু না।
তিনি বলেন, যখন করোনা বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করে তুললো তখন এই জনপ্রতিনিধিরাই গ্রামে গঞ্জে ঘুরে ঘুরে মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাড়িয়েছে, অসহায় মানুষের মাঝে দিন রাত খাদ্য সহায়তা পৌছে দিয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি মেয়রের দ্বায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ডেঙ্গু মোকাবেলায় জনসচেতনতা শুরু করলাম, মানুষের বাসা বাড়িতে অফিসে গিয়ে অভিযান চালিয়েছি এবং করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর শহরের নানা জায়গায়, রাস্তাতে জীবাণুনাশক ছিটাতে শুরু করি। বাস ও বাস টার্মিনালগুলোকে জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করতে সর্বদা চেষ্টা করবো, সেই সাথে জনগনকেও সচেতন হতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা প্রথমেই করোনা মোকাবেলায় আমরা ত্রান বিতরন করেছি, জনসচেতনতার জন্য রেকোর্ডিং মাইকিং চালু করেছি। আমাদের মহানগর হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা শুরু হয়েছে, কিছুদিন আগেই সেখানে ভেন্টিলেটরসহ ৫ বেডের আইসিইউ বেড স্থাপন করেছি।
তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু প্রকোপ কমাতে এবং মশকের প্রজনন ক্ষেত্রগুলোকে নিধন করার জন্য সকল জলাবদ্ধ লেক ও জলাশয় গুলোকে পরিষ্কার করছি সেই সাথে তেলাপিয়া মাছ এবং হাস চাষ শুরু করেছি যাতে ডেঙ্গুর লাভা বংশবিস্তার না করতে পারে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, করোনার শুরুতে আমরা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমরা পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়। ক্রমান্বয়ে স্বেচ্ছাসেবী সহ কর্মকর্তারা প্রতিওয়ার্ডে সচেতনামূলক কাজ করা হয়। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পরে শহয়ে ইতিমধ্যে বেসরকারিভাবে একটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে, যা সিটি কর্পোরেশন এর সাথে এক যোগে কাজ করবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ সদস্যের টিম করে কাজ করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ হটস্পট হিসেবে ধরা হয়। এর পরে নারায়নগঞ্জে পিসিআর ল্যাবে নিয়মিত টেস্ট করানো হচ্ছে। মার্চের পর থেকে ২৭ টি ওয়ার্ডের ৩৬ জন কাউন্সিলর এর উদ্যোগে করোনা সংক্রমণ রোধে কাজ করা হয়। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে কাজ করে যাচ্ছে কর্মকর্তারা।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা মার্চের শুরু থেকে মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শহরের বিভিন্ন স্থানে আমরা হাত ধোয়া, হ্যান্ড সেনিটাইজার এর ব্যবস্থা করা হয়। এরপরে কর্মহীন মানুষদেরকে প্রতি ওয়ার্ডে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি চালু করা হয়। এখনো পর্যন্ত আমরা ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহয়তা প্রদান করা হয়।
বাসস/সবি/বিকেডি/২১১০/এবিএইচ