বাসস দেশ-৩৯ : বাংলাদেশে করোনায় মৃতের হার কম

349

বাসস দেশ-৩৯
কোভিড-১৯-মৃত্যু-বাংলাদেশ
বাংলাদেশে করোনায় মৃতের হার কম
॥ মোর্শেদুর রহমান ॥
ঢাকা, ৪ জুন, ২০২০ (বাসস) : বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) এ মৃতের হার কম। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে যেখানে করোনায় মৃতের হার ৫.৯১ শতাংশ, সেখানে ঘন জনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে এই হার ১.৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. নাসিমা সুলতানা বাসসকে বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুর হার বৈশ্বিক হারের তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশে এই হার ১.৩ শতাংশ।’
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী করোনায় বৈশ্বিক মৃত্যুহার ৫.৯১ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) এই হারের কথা জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যলয়টি বিশ্বব্যাপী এই মহামারী পর্যবেক্ষণ করছে।
এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্্েরর করোনায় মৃত্যুর হার ৫.৮ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ১৪.১ শতাংশ, ইতালিতে ১৪.৪ শতাংশ, ব্রাজিলে ৬.৫, ফ্রান্সে ১৫.৪ শতাংশ, স্পেনে ১১.৩ শতাংশ, মেক্সিকোতে ১০.৯ শতাংশ, বেলজিয়ামে ১৬.২শতাংশ, জার্মানীতে ৪.৭ শতাংশ, কানাডায় ৮ শতাংশ ও নেদারল্যান্ডে ১২.৮ শতাংশ।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনায় মৃতের হার ২.৮ শতাংশ ও পাকিস্তানে ২.১ শতাংশ।
সুলতানা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, ব্রাজিল মেক্সিকো ও কানাডার মতো দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা এখনো অনেক ভাল। পাশাপাশি করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়ার হার আনুমানিক ২১.১৫ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আরো বলেন, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের প্রায় ৫০ শতাংশ তুলনামূলকভাবে বয়সে নবীন এবং এটাই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকার ও অধিক মাত্রায় সুস্থ্য হওয়ার অন্যতম কারণ। এ কারণেই করোনা ভাইরাসে মৃতের হার এখানে কম।
সাবেক ডিজিএইচএস প্রধান ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, হটস্পট সনাক্ত, প্রবেশ দ্বারগুলোতে ইন্টেসিফাই স্ক্রিনিং বসানো ও ব্যাপক জনসচেতনামূলক প্রচারণাসহ সরকারের বিভিন্ন কার্যকরী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই বাংলাদেশে করোনায় মৃতের হার অনেক কম।
এই সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এও বলেছেন, অফিস ও গণপরিবহণ পুনরায় চালু করে দেয়ার পর করোনা মোকাবেলায় সাধারণ মানুষকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ব্যাপক প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি জনগণ যেন যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নাসিমা সুলতানা আরো বলেন, ‘আমরা মারাত্মকের চেয়ে প্রাথমিক ও মধ্যম পর্যায়ের করোনা রোগী বেশি পাচ্ছি। স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা মেনে চললে প্রাথমিক ও মধ্যম পর্যায়ের করোনা রোগিরা দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রথমিক ও মধ্যম পর্যায়ের রোগিদের চিকিৎসা করতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য সহজ হয়।
আইইডিসিআর-এর উপদেষ্টা ডা. মুস্তাক হোসেন বলেন, সরকার করোনার বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও হটলাইনের কারণে বহু প্রাণ রক্ষা পেয়েছে।’
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, বাংলাদেশ অতীতে যক্ষ্মা, ম্যারেরিয়া, ডেঙ্গু এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুকে সফলভাবে মোকাবেলা করেছে। এ সব রোগ মোকাবেলার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় আমরা অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, দেশের পূর্ব অভিজ্ঞতা করোনা মহামারী মোকাবেলাকে সহজ করেছে। ফলে, এখন অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় এখানে মৃতের হার অনেক কম।’
বাসস/এসপিএল/এমএমআর/অনু-কেএআর/২২৩০/আরজি