ব্যাষ্টিক অর্থনৈতিক সাফল্য গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়ন করছে

471

রংপুর, ৪ জুলাই, ২০১৭ (বাসস) : জাতি সর্বাত্মকভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জোর দেয়ায় ব্যাষ্টিক অর্থনৈতিক সাফল্য গ্রামীণ নারী ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করেছে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিন বলেন, হাজারো গ্রামীণ নারী তাদের আয়ের পথ সৃষ্টি করায় দারিদ্র্যের হার হ্রাসের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি হচ্ছে।
বৃহত্তর সামাজিক নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সরকারের অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে জেলার মঙ্গা মৌসুমে দারিদ্র্য দূরীকরণে গ্রামীণ নারীদের সহায়তা দিচ্ছে।
রংপুরভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান নর্থবেঙ্গল ইনিস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সৈয়দ সামসুজ্জামান বলেন, গত আট বছরে গ্রামীণ নারীরা দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক অবদান রেখেছে।
তিনি বলেন, গ্রামীণ নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির ফলে গ্রামের গৃহস্থালী কাজে এখন আর নারী ও কিশোরীদের খুঁজে পায় না, যা এক দশক আগেও মানুষ মৌসুমী মঙ্গায় ভুগে থাকত।
যুব উন্নয়ন বিভাগের উপ-পরিচালক দিলগিরি আলম বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জেলায় স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে বিভাগ থেকে ৩ হাজার বেকার পুরুষ ও নারীকে ১১টি ভোকেশনাল ও কারিগরী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, স্বল্প মেয়াদী ও সুদমুক্ত ঋণ, কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন বেকার যুবক ও নারীকে ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ, সরকারি সহায়তা, এনজিও, দাতা সংস্থা, দাতা সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার মূলত দারিদ্র্য নিরসনে গ্রামীণ নারীদের সহায়তা প্রদান করে থাকে।
জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষামূলক ত্রাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, কাজের বিনিময় খাদ্য, কাজের বিনিময়ে অর্থ, পিছিয়েপড়া শ্রেণির উন্নয়ন এবং দুস্থ নারীদের জন্য বিধবা ভাতা গ্রামীণ নারীদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে অবদান রাখছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস-এর পরিচালক (উন্নয়ন কর্মসূচি) মঞ্জুশ্রী সাহা জানান, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আয়বর্ধক নানা কর্মসূচি গ্রহণের ফলে গ্রামীণ নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
জেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাওসার পারভীন জানান, ২০১৫-২০১৬ বর্ষে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় জেলার ১৯ হাজার ৬০৪ বাস্তুহীন নারীর মাঝে মোট ১৪ হাজার ১১৪ টন চাল ও গম বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া আমরা গত অর্থবছরে ৪ হাজার ৩৯২ জন গর্ভবতী নারীকে ২৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা সহায়তা, ১ হাজার ৮শ’ দরিদ্র স্তন্যদানকারী মায়েদের ১ কোটি ৮ লাখ টাকা সহায়তা এবং ৮৮৫ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নারীকে চক্রবৃদ্ধি সুদে ঋণ প্রদান করেছি।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের উপপরিচালক আবদুস সবুর জানান, জেলায় পরিবারের ৫৭ হাজার ৬৩৪ জন বিশেষ করে নারী সদস্য, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বাসস’কে বলেন, ব্যাষ্টিক অর্থনৈতিক সাফল্য জেলার প্রতিটি গ্রামের নারীদের ক্ষমতায়ন করছে যা এসডিজি অর্জনে অবদান রাখছে।