বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি) : কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পাঁচদফা প্রস্তাব পেশ, সম্মিলিত বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

388

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-ভার্চুয়াল কনফারেন্স
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পাঁচদফা প্রস্তাব পেশ, সম্মিলিত বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী মানবজাতির ইতিহাসে এক সংকটময় সময়ে এই ধরনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য ডব্লিউইএফ সভাপতি এবং ফোরামকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, গোটা বিশ্ব একটি অদৃশ্য এবং অজানা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছে, যার নাম কোভিড -১৯। এতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জানুয়ারির প্রথম থেকেই সরকার ভাইরাসের বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রাণঘাতি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাঁর সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন যে, ৪১ দিনের ছুটি কার্যকর করার ফলে দেশের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ লকডাউন অবস্থায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এসব পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে গত ৪৭ দিনের মধ্যে ১২৭ জন মারা যাওয়ার সংখ্যা কম রয়েছে এবং আক্রান্ত লোকের সংখ্যা হচ্ছে ৪,১৮৬ জন।’
এই মহামারীর কারণে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরবরাহ ও চাহিদা উভয় ধরনের চাপ মোকাবেলা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আঘাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সরকার বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে আমাদের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের জন্য ১১.৬০ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছি যা আমাদের জিডিপির ৩.৫% এর সমান।’
তিনি বলেন, এই প্যাকেজের প্রাথমিক লক্ষ্য হবে উৎপাদন ও পরিষেবা খাত, কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের বিভিন্ন সুবিধা।
খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়টিকে একটি আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। ‘তবে দীর্ঘায়িত সঙ্কটের ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবার জন্য, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরবরাহ বিঘিœত হওয়ার কারণে বাংলাদেশের কৃষিখাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় কৃষির জন্য প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, তাঁর সরকার প্রায় ৫ কোটি লোককে সরাসরি নগদ অর্থ প্রদান করতে চলেছে এবং ছয় লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য এখন পর্যন্ত দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষদের সহায়তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে, তাই সরকার তাদেরকেও সামগ্রিক কৌশলের অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নীতিগত কৌশলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা, বর্ধিত প্রতিযোগিতা এবং দারিদ্র্য বিমোচনের প্রয়াস জোরদার করার মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার দিকে গুরুত ¡দেয়া হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের প্রধান পদক্ষেপগুলো হবে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক প্যাকেজ প্রবর্তন, সামাজিক সুরক্ষা বলয় কর্মসূচি প্রসারিত এবং অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং পরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং মহামারী থেকে উদ্ভূত সংকট মোকাবিলার জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সে সম্পর্কে বিশেষ ব্রিফিং দেন।
স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ রূপদান বিষয়ক ডব্লিউইএফ’র প্রধান আর্নড বার্নার্ট ফোরামের স্বাস্থ্যসেবা কমিউনিটির পক্ষ থেকে করোন ভাইরাস পরিস্থিতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন।
পরে সঞ্চালক আলোচনার জন্য ফ্লোর উন্মুক্ত করে দেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অ্যাকশন গ্রুপের সদস্য অংশগ্রহণকারীদেরকে তাদের মতামত জানাতে অনুরোধ করেন।
বাসস/এএইচজে/এসএইচ/-অনু-শআ/২৩২৮/-শআ