করোনা মোকাবেলায় সচিবদের জেলার সমন্বয়ের দায়িত্ব প্রদান করেছে সরকার

725

ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২০ (বাসস) : করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং ৬৪ জেলার ত্রাণ কার্য সমন্বয়ে প্রতি জেলার জন্য একজন করে সচিবকে দায়িত্ব প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো একটু সীমিত হয়ে গেছে। তাই প্রতিটি জেলার জন্য একজন করে সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছি। ত্রাণ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজগুলো সঠিকভাবে হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট জেলায় খোঁজ-খবর নেবেন এবং সেই রিপোর্টটা আমাকে দেবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে সর্বশেষ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের আট জেলার প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি, সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ ঘোষণা দেন।
ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ, গাজীপুর,টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর,শেরপুর, নেত্রকোনা এবং ময়মনসিংহ সদরের স্থানীয় মসজিদের ইমাম,আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী ও সশ¯্র বাহিনীর প্রতিনিধিগণ এবং স্থানীয় সাংবাদিক সহ ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং আইইডিসিআর এতে সংযুক্ত ছিল।
ভিডিও কনফারেন্সে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত ত্রাণ সহায়তা ঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী ।


সেই সাথে তাঁর দলের লোকজনকে (আওয়ামী লীগ,যুব লীগ,ছাত্রলীগ সহ সকল সহযোগী সংগঠন) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যারা একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে দেবেন। সেখানে সত্যিকার যাদের ত্রাণ পাওয়ার কথা তাঁরা যাতে পায়, সে তালিকা প্রণয়নেও সহযোগিতা করবেন এবং প্রয়োজনবোধে ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। একইসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখবেন,বলেন তিনি।
পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৬৪ সচিবকে একটি করে জেলার দায়িত্ব দিয়ে আদেশ জারি করা হয়। মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়- ‘নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা জেলার সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করে করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার কাজ তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করবেন।’
দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা সমন্বয় কাজে তার মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/ দফতর/ সংস্থার উপযুক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, আসন্ন রমজান মাসে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর সরবরাহ ঠিক রাখতে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন,‘রমজান মাসে খাদ্য সরবরাহটা যাতে সঠিকভাবে হয় সেজন্য আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নেব।’
বাজারে পণ্য সরবরাহ বজায় রাখার জন্য মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারকরণেও তিনি প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন।
শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এবং অবস্থান পরিবর্তন না করে নিজ নিজ অবস্থানে অবস্থান করার আহবানও পুণর্ব্যক্ত করেন।
গাজীপুর জেলার সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মায়ের নামে সেখানে প্রতিষ্ঠিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালটিও করোনা রাগীদের চিকিৎসার জন্য প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের উল্লেখ করেন এবং এজন্য স্থানীয় প্রশাসনকে হাসপাতল পরিচালনাকারী মালয়েশিয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলার পরামর্শ দেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক গাজীপুর থেকে এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা.মুরাদ হাসান জামালপুর প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন।
মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম,পিএমও সচিব মো.তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এরআগে শেখ হাসিনা ৪ দফা পৃথক ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা,চট্টগ্রাম,খুলনা,সিলেট এবং বরিশাল বিভাগের ৪৩ টি জেলার সঙ্গেও মত বিনিময় করেন।
জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিবরা হলেন- মো. শাহ কামাল, সিনিয়র সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, চাঁদপুর, মো. আসাদুল ইসলাম, সিনিয়র সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, মুন্সিগঞ্জ, এন এম জিয়াউল আলম, সিনিয়র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, কুমিল্লা, আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, সিনিয়র সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, সিরাজগঞ্জ, মো. আলমগীর, সিনিয়র সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, টাঙ্গাইল, মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, চট্টগ্রাম, বেগম সাহিন আহমেদ চৌধুরী, সদস্য (সিনিয়র সচিব) পরিকল্পনা কমিশন, নোয়াখালী, মো. মহিবুল হক, সিনিয়র সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বাগেরহাট, হেলালুদ্দীন আহমদ, সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, কক্সবাজার, মো. আনিছুর রহমান, সিনিয়র সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, শরীয়তপুর, বেগম শামীমা নার্গিস, সদস্য (সিনিয়র সচিব), পরিকল্পনা কমিশন, জয়পুরহাট, মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, গোপালগঞ্জ, পবন চৌধুরী, নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, রাঙ্গামাটি, সম্পদ বড়–য়া, সচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, লক্ষ্মীপুর, মো. নজরুল ইসলাম, সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, রাজশাহী, সুবীর কিশোর চৌধুরী, চেয়ারম্যান (সচিব), বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল, ময়মনসিংহ, উম্মুল হাছনা, চেয়ারম্যান (সচিব), ভূমি আপীল বোর্ড, নেত্রকোনা, আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, খাগড়াছড়ি, সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী, সচিব, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, নাটোর, মো. আসাদুল ইসলাম, সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, ঝিনাইদহ, মো. নুরুল আমিন, সচিব, পরিকল্পনা বিভাগ, নওগাঁ, কবির বিন আনোয়ার, সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, মানিকগঞ্জ, মো. আকরাম-আল-হোসেন, সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মেহেরপুর, আব্দুর রউফ তালুকদার, সচিব, অর্থ বিভাগ, শেরপুর, মো. আব্দুল হালিম, সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়, বরিশাল, মো. নাসিরুজ্জামান, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, ঝালকাঠি, মো. সামছুর রহমান, চেয়ারম্যান (সচিব) বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, পটুয়াখালী, মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়, পঞ্চগড়, মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, ফরিদপুর, আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্লাহ, এনডিসি, সচিব, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, ঠাকুরগাঁও, সত্যব্রত সাহা, মহাপরিচালক (সচিব), বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড, গাজীপুর, কাজী রওশন আক্তার, সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মাগুরা, ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি, সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যশোর, আবুল কালাম আজাদ, সদস্য (সচিব), পরিকল্পনা কমিশন, ভোলা, মো. মেসবাহুল ইসলাম, সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, লালমনিরহাট, মো. শহিদুজ্জামান, সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, কুষ্টিয়া, মো. জাকির হোসেন আকন্দ, সদস্য (সচিব) পরিকল্পনা কমিশন, হবিগঞ্জ, কে এম আলী আজম, সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, নড়াইল, মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, সচিব, সেতু বিভাগ, বান্দরবান, শেখ ইউসুফ হারুন, সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সাতক্ষীরা, মো. রকিব হোসেন এনডিসি, রেক্টর (সচিব), বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি), নারায়ণগঞ্জ, মো. আখতার হোসেন, সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মাদারীপুর, মো. সেলিম রেজা, সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পাবনা, মো. নূর-উর-রহমান, সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, গাইবান্ধা, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সচিব, বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয়, রাজবাড়ী, লোকমান হোসেন মিয়া, সচিব, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, সিলেট, মো. রেজাউল আহসান, সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, রংপুর, তপন কান্তি ঘোষ, চেয়ারম্যান (সচিব), বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয়, চুয়াডাঙ্গা, মো. মাহবুব হোসেন, সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, জামালপুর, রওনক মাহমুদ, সচিব, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ড. সুলতান আহমেদ, সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগ, বরগুনা, মো. আলী নূর, সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, ঢাকা, মোহাম্মদ জয়নুল বারী, সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সুনামগঞ্জ, মো. নুরুল ইসলাম, সচিব, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দিনাজপুর, বদরুন নেছা, রেক্টর (সচিব), বিসিএস (প্রশাসন) একাডেমি, নরসিংদী, মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পিরোজপুর, জিয়াউল হাসান এনডিসি, সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, কুড়িগ্রাম, মো. আবদুল মান্নান, চেয়ারম্যান (সচিব), ভূমি সংস্কার বোর্ড, কিশোরগঞ্জ, গোলাম মো. হাসিবুল আলম, নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব), জাতীয় দক্ষতা কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, নীলফামারী, মো. আমিনুল ইসলাম খান, সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মৌলভীবাজার, ফাতিমা ইয়াসমিন, সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বগুড়া, মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, সচিব, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, ফেনী এবং মো. কামাল হোসেন, সচিব, (সমন্বয় ও সংস্কার) মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, খুলনা।