‘সিপিডি’র গবেষণাটি আসলে কেমন!’ -প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

617

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল, ২০২০(বাসস) : ‘বর্তমানে দেশের এক তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ সরকারের সহায়তার আওতায় এসেছে এই বিষয়টি সিপিডির গবেষণায় উঠে এলো না, এই বিষয়টি আশ্চর্যের বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে মন্তব্য করেন, ‘তাদের গবেষণাটি আসলে কেমন!’
আজ সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। পরে মন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিওবার্তা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপ মালা নিয়ে সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মন্তব্য- ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য প্রণোদনা নেই’ এবিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী জানান, সরকার ৫০ লাখেরও বেশি পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ত্রিশ কেজি করে চাল দিচ্ছে বছরে ৭ মাস। কার্যত ৫০ লাখ পরিবারের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এ সাহায্য পাচ্ছে। এই সহায়তার সময়সীমা বৃদ্ধির চিন্তা-ভাবনাও করছে সরকার ।
এছাড়া ১৭ লাখ বিধবা, ৪৪ লাখ বয়স্ক, ১৬ লাখ দুস্থ জনসহ প্রায় ১ কোটি মানুষকে বিভিন্ন ধরণের ভাতা দেয়া হয়। করোনার কারণে কর্মহীন জনগোষ্ঠীর জন্য ৭৬০ কোটি টাকাসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, উল্লেখ করেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ সব কিছুই প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। কিন্তু আমার কাছে আশ্চর্য লাগছে, সিপিডি’র মতো একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় এই বিষয়গুলো আসলো না!’ গত ১১ বছরে দেশের জিডিপি প্রায় সাড়ে ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ও ক্রয় ক্ষমতাও প্রায় তিনগুণ বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ১১ বছরে সিপিডি এই উন্নয়নের কোনো প্রশংসা করতে পারেনি। তাদের যে চিরাচরিতভাবে দোষ খোঁজার চেষ্টা, সে হিসেবে তাদের এই মন্তব্য গতানুগতিক।’
ড. হাছান বলেন, ‘আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। এই বিশেষ পরিস্থিতিতে শুধু সমালোচনার খাতিরে যেন সমালোচনা না করি। সরকারকে পরামর্শ অবশ্যই যে কেউ দিতে পারে, সেই পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা সরকারের আছে।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বিএনপি ত্রাণ বিতরণের ফটো সেশন করে সরকারের সমালোচনায় ব্যস্ত বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দেখতে পাচ্ছি গত কিছুদিন ধরে ঘরে বসে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য রাখতে। আর ঢাকা শহরে হাতেগোনা কিছু সামগ্রী বিতরণ করে আর ফটোসেশন করে সরকারের সমালোচনা করতেই তারা ব্যস্ত। তারা জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি।’
‘বিএনপির এই বক্তব্যগুলো আসলে হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেলে মানুষ যেভাবে বক্তব্য রাখে, সেই রকম’ বর্ণনা করে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তার প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে তাদের বিভিন্ন নেতা প্রতিদিন বক্তব্য রাখছেন। আমরা জনগণের পাশে আছি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এই বিশেষ পরিস্থিতিতে শুধু সমালোচনার খাতিতে যেন সমালোচনা না করি, সরকারকে পরামর্শ অবশ্যই যে কেউ দিতে পারে, সেই পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা সরকারের আছে।’
বক্তব্যের শুরুতে সকল গণমাধ্যমকর্মীসহ দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান তথ্যমন্ত্রী। এসময় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।