করোনার বিস্তার ঠেকাতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

335

চট্টগ্রাম, ৭ এপ্রিল, ২০২০ (বাসস) : করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামকেও সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে,বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মোড়ে মোড়ে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
বন্ধ করে দেয়া হয়েছে নগরীতে প্রবেশ এবং নগরী থেকে বের হওয়ার পাঁচটি পথ। গলিতে গলিতে টহল দিচ্ছে পুলিশ। কার্যত ঢাকার পর বন্দরনগরী চট্টগ্রামকেও সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হলো।
মরনঘাতি করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এমন কঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মাহাবুবর রহমান।
তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরীর প্রধান পাঁচটি প্রবেশ পথ সিটি গেইট, অক্সিজেন মোড়, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু, কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও কালুরঘাট সেতু পয়েন্টে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ব্যারিকেড তৈরী করেছে।
কমিশনার বলেন, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার রাত ১০টা থেকেই নগরীর সিটি গেইট, অক্সিজেন মোড়, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু, কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও কালুরঘাট সেতু পয়েন্টে আগে থেকেই অবস্থান নেয় পুলিশ। ওইসব পয়েন্টে পুলিশ ব্যারিকেড তৈরী করে বন্ধ করে দেয়া হয় নগরীতে প্রবেশ এবং নগরী থেকে বের হওয়ার পথ। তবে এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে জরুরি সেবা, চিকিৎসা, ভোগ্যপণ্য ও রফতানি পণ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহন।
পুলিশ সদস্যরা বিনা প্রয়োজনে চলাচলকারী যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল ঠেকাতে তৎপর রয়েছে। ফলে আগের চেয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার অবস্থা ছিল একেবারে ভিন্ন। সড়কে মানুষের চলাচল খুবই নগণ্য। ওষুধের দোকান ছাড়া অলি-গলির দোকানও বন্ধ রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম শহর দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত। দেশের সিংহভাগ আমদানি রপ্তানী হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এ নগর কখনো ঘুমাতো না। এ বন্দরকে কেন্দ্র করে পুরো শহরে দিনরাত লেগে থাকতো কর্মব্যস্ততা। কখনো এ কর্মব্যস্ততা থেমে থাকেনি। সবসময় ছিল জীবন্ত। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এ শহর এখন প্রায় মৃত ।
আইনজীবী নিখিল কুমার নাথ জানান, আদালত থেকে শুরু করে সব বন্ধ। শহরের দোকানপাট বন্ধ। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। কারো সাথে সাক্ষাৎ করা যাচ্ছে না। সম্পূর্ণ নতুন একটি অভিজ্ঞতা। এমনটা কখনো দেখেনি এ নগরের বাসিন্দারা।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এমন লকডাউন অবস্থা প্রয়োজন ছিল। আমাদের সবাইকে এটা মেনে চলতে হবে। অন্যতায় আমাদেরই ক্ষতি হবে।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার ৬ এপ্রিল রাত ১০টা থেকে চট্টগ্রাম নগর লকডাউন ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। ফলে এখন থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে কেউ প্রবেশও করতে পারছেনা না। কেউ নগর থেকে বেরও হতে পারছে না। এর আগে লোকজনের চলাফেরায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে গণপরিবহন চলাচল। এছাড়াও ওষুধের দোকান ছাড়া সন্ধ্যার পর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব ধরণের দোকান পাট।