সকলের দ্বারে খাবার পৌঁছে দেয়ার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

765

ঢাকা, ৫ এপ্রিল ২০২০ (বাসস) : তাঁর সরকার মানুষের দোরগোড়ায় খাদ্য পৌঁছে দিতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে এই দু:সময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রাণঘাতী রোগের বিস্তার রোধে দেশব্যাপী বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় কাজ না পেয়ে দিনমজুর ও ছোট ব্যবসায়ীসহ অনেক লোক কষ্টে তাঁদের দিন কাটাচ্ছেন, কাজেই প্রতিটি দ্বারে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি আজ সন্ধ্যায় তাঁর সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও করফারেন্সের মাধ্যমে পিএমও’র সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অনুদানের চেক গ্রহণকালে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস পিএমও’তে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে নিজ দল আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসন সকলকে বিশেষ করে যারা সামাজিক মর্যাদার কারণে ত্রাণ চাইতে পারছেন না সেসব দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘সমাজে একটা বড় অংশ রয়েছে, যারা মর্যাদার কারণে সাহায্য চাইতে পারেনা। আমাদের তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
করোনা ভাইরাসের বিপক্ষে লড়াইয়ে অবদান রাখার জন্য সংগঠনগুলোকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই গুরুত্বপুর্ণ সময়ে আপনারা যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁদের সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। জাতি আপনাদের এই অবদান চিরকাল স্মরণ করবে।’
করেনাভাইরাসের মহামারি প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী বিরূপ প্রভাব ফেলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত করোভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সকলে স্বাস্থ্য বিধি সঠিকভাবে মেনে চললে এই পরিস্থিতি আমরা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ।’
রেলপথ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, মংলা বন্দর কতৃর্পক্ষ, চট্টগ্রাম বন্দর কতৃর্পক্ষ, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ স্টিল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কতৃর্পক্ষ (বিএসইসি), পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, ভ’মি মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ,জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, কোষ্টগার্ড, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,অগ্রণী ব্যাংক, সরকারী ব্যাংকসমূহ, এফবিসিসিআই,বিজিএমইএ, বিকেএমইএ,পিএইচপি, মেঘনা গ্রুপ, ইউনাইটেড গ্রুপ, মোমেন গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, রুপায়ন গ্রুপ, ফ্রেস গ্রুপ, সিটি গ্রুপ,কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন অব বাংলাদেশ (কেআইবি), বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড,মিডল্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড, আইডিকোল পো ফোরাম লি, ড্রিম হলিডে পার্ক, নরসিংদী, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, মধাবদী ডাইং লিমিটেড, কেসিজে এন্ড এ্যাসোসিয়েটস লি,ওয়েষ্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ট্রাকো, ক্যাপিটেক এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, সৎসঙ্গ বাংলাদেশ, বায়রা, কারা অধিদপ্তর,গণপূর্ত অধিদপ্তর, বেসিক বিল্ডার্স লিমিটেড, বেপজা, সরকারী তিতুমীর কলেজ, মহাখালী,এ এম গ্রুপ এবং ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান প্রদান করে।
তাঁর ত্রাণ তহবিলে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের অনুদানের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য’ এই নীতি অনুসরণ করে সবাই যদি তাঁদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে দেশে বর্তমানে যে সমস্যাটি রয়েছে তা অচিরেই দূর হয়ে যাবে।
এই ভাইরাসটি ধনী এবং গরিব উভয়ের জন্যই হুমকি নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভাইরাসটি ধনী বা দরিদ্রদের জন্য একই ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ না থাকার বিষয়টিই প্রমাণ করেছে।’
একইভাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অস্ত্র এবং অর্থের দিক থেকে যে দেশ যতই শক্তিশালী হোক না কেন সকলেই এই ভাইরাসের একই ধরণের শিকারে পরিণত হয়েছে এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা সর্বশক্তিমান ব্যতীত কারো নেই।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে পুনরায় পবিত্র শবে বরাতের রাতে নিজ ঘরে অবস্থান করেই দেশবাসীকে ইবাদত-বন্দেগী করার এবং দেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে করোনার কবল থেকে রক্ষার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে প্রার্থনা করার আহবান জানান।
তিনি করোনাভাইরাস ছাড়ানো প্রতিরোধের জন্য বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ, কোথাও জনসমাগম না করে বরং ঘরে অবস্থান করে রেডিও, টেলিভিশন এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সাহায্যে উদযাপনের আহবানও পুনর্ব্যক্ত করেন।