বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ : ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

124

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩
শেখ হাসিনা-বাণী
ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা, ২৫ মার্চ, ২০২০ (বাসস ) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আসুন, মহান মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা কওে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করি এবং বাংলাদেশকে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ-শান্তিপূর্ণ আবাসভূমিতে পরিণত করি। মহান স্বাধীনতা দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।’
প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে এই আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশের সকল নাগরিক এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ২৬ মার্চ আমাদের জাতির আত্মপরিচয় অর্জনের দিন। পরাধীনতার শিকল ভাঙ্গার দিন। এই দিনে তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি শ্রদ্ধা জানান জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনকে। সম্মান জানান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাকে। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন তাঁদের প্রতি জানান গভীর সমবেদনা। কৃতজ্ঞতা জানান সকল বন্ধুরাষ্ট্র, সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি, যাঁরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অকৃপণ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মার্চ ২০২০ থেকে মার্চ ২০২১ সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। ১৭ মার্চ মুজিবর্ষের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি ইউনেস্কোর উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ‘মুজিববর্ষ’।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তানি শাসকদের নিপীড়ন এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বাধ্য হয় ১৯৭০ সালে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে উল্টো নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।’ তিনি বাঙালি জাতিকে শত্রুর মোকাবিলা করার নির্দেশ দেন।
‘পাকিস্তনি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে অতর্কিতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ঢাকাসহ দেশের শহরগুলোতে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টার ও তৎকালীন ইপিআর-এর ওয়ারলেসের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এই ঘোষণা প্রচারিত হয়।’
তিনি বলেন, জাতির পিতার নির্দেশে পরিচালিত ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে, স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আজ জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করছি। গত ১১ বছরে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নির্মূলে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরাই বিশ্বে প্রথম শত বছরের ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করা হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশ্বের ৫টি দেশের একটি বাংলাদেশ। উন্নয়নের ৯০ ভাগ কাজই নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য পরিচালনা করছি, বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ একটানা সরকারে থাকার ফলে জনগণ আজ উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উুঁচু করে দাঁড়িয়েছি।’
বাসস/তবি/কেসি/১৭৫৫/আরজি