বাসস দেশ-৩২ (ছবিসহ) : রংপুরে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর কাজ শুরু

423

বাসস দেশ-৩২ (ছবিসহ)
করোনা-সশস্ত্র বাহিনী-রংপুর (লিড)
রংপুরে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর কাজ শুরু
রংপুর, ২৪ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : সারাদেশের ন্যায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ তিনটি টিমে বিভক্ত হয়ে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিভিল প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার থেকে রংপুর সিটি কর্পোরেশনসহ জেলার আট উপজেলায় কাজ শুরু করেছেন।
রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বাসস’কে জানান, সশস্ত্র বাহিনী করোনা ভাইরাসের সামজিক সংক্রমণ প্রতিরোধে বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, ঘোষিত আইসোলেশন সেন্টার এবং ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ভিজিট ও মনিটরিং এবং প্রশাসনের সফলতা ও দূর্বলতা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সিভিল প্রশাসনের সাথে কাজ করবে।
এছাড়া করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় সশস্ত্র বাহিনী বিভিন্নভাবে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে এই মহামারী প্রতিরোধে কাজ করবে।
তিনি জানান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাসির এবং মেজর ইমামের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনীর একটি টিম- এর সাথে আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সবাকক্ষে একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা তিনটি টিমে ভাগ হয়ে রংপুরে কাজ করছেন।
বিভিন্ন উপজেলা পরিদর্শন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে মাঠে কাজ করার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আলোকে তারা মাঠে পরবর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
তিনি জানান, সশস্ত্র বাহিনীর একটি টীম তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলায়, অপর একটি টিম পীরগঞ্জ ও গংগাচড়া উপজেলায় এবং আরো একটি টীম বাকি চারটি উপজেলায় এবং রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কাজ করবে।
এদিকে রংপুর বিভাগের সহকারী পরিচালক (স্বাস্থ্য) এবং করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)- এর ফোকাল পার্সন এবং ডা. জেড এ সিদ্দিকী বাসস’কে জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর তদারকিতে বর্তমানে করোনভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে রংপুর বিভাগের আটটি জেলায় মোট ১ হাজার আটশ’ ২৫ জন অভিবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
ডা. সিদ্দিকী বলেন, রংপুর বিভাগের আটটি জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৩০৪ জন নতুন অভিবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে পর্যবেক্ষনের জন্য আলাদা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রংপুর বিভাগে এপর্যন্ত মোট দু’হাজার একশ’ ৮৪ জন অভিবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে তাদের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৩৫৯ জনের শরীরে করোনভাইরাসজনিত কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত না হওয়ায় ১৪ দিন পরে ছাড়পত্র দেয়া হয়।
বর্তমানে রংপুর বিভাগে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা এক হাজার আটশ’ ২৫ জন অভিবাসীর মধ্যে রংপুর জেলায় ১৯১ জন, পঞ্চগড়ে ৫৬২ জন, নীলফামারীতে ১৬৮ জন, লালমনিরহাটে ১৩১ জন, কুড়িগ্রামে ১৭৬ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৭৪ জন, দিনাজপুরে ১৯৭ জন এবং গাইবান্ধা জেলায় ২২৬ জন রয়েছেন।
ডাঃ সিদ্দিকী বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের যে কোনও সময় বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (আরএমসিএইচ)-এর আইসোলেশন ইউনিটে ১০ টি শয্যা এবং রংপুর বিভাগের প্রতিটি উপজেলা সদরে তিনটি থেকে চারটি শয্যা প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়াও রংপুর নগরীর সদর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় নবনির্মিত ১০০ শয্যাবিশিষ্ট রংপুর শিশু হাসপাতালে প্রবাসী বাংলাদেশি বা সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস সংক্রামিত রোগীদেরকে প্রতিষ্ঠানিকভাবে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে ২০০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, “৩১ শয্যার হারাগাছ হাসপাতাল, তাজহাট বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং নগরীর যুব উন্নয়ন অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে যেকোন সময় করোনা ইউনিট হিসাবে ব্যবহার করা হবে।”
রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. আমিন আহমেদ খান ভবিষ্যতে দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি এড়াতে কোভিড-১৯ এর সামাজিক সংক্রমন প্রতিরাধে শতকরা একশ ভাগ অভিবাসীদেরকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার জন্য কমিউনিটি পর্যায়ে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই।
বাসস/এমআই/২১০০/কেজিএ