আমদানি করা পুরনো গাড়ির শুল্ক কমানোর প্রস্তাব বারভিডার

383

ঢাকা, ১৯ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : আমদানি করা পুরনো গাড়ির শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। বিশেষ করে শুল্ক ফাঁকি ঠেকাতে বেশি সিসির গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক-বাজেট আলোচনায় বারভিড়ার সভাপতি আবদুল হক এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে আলোচনায় বারভিডার নেতৃবৃন্দ ছাড়াও এনবিআরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির প্রস্তাবে ১৮০০ সিসি পর্যন্ত ইঞ্জিন ক্ষমতাসম্পন্ন হাইব্রিড প্রযুক্তির গাড়িতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক অব্যাহত রাখা এবং ১৮০১ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া ২৫০১ থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ৬০ শতাংশ, ৩৫০১ থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ, ৪০০ সিসির ওপরে ২০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে ১৮০০ সিসির মাইক্রোবাস ১০ শতাংশ, ১৮০১ সিসি থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ২০ শতাংশ এবং ২৫০১ বা তদুর্ধ্ব মাইক্রোবাস আমদানিতে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
বারভিডার সভাপতি আবদুল হক বলেন, ব্র্যান্ডনিউ গাড়ির মূল্য নির্ধারিত হয় আমদানিকারকের ঘোষিত মূল্যের ভিত্তিতে। এতে নতুন গাড়ির চেয়ে পুরনো গাড়ির কর বেশি দাড়াচ্ছে, যা বৈষম্য তৈরি করছে। তাই পুরনো গাড়ির রফতানিযোগ্য মূল্য নতুন মূল্য থেকে ২০ শতাংশ বিয়োজন দিয়ে নির্ধারণের প্রস্তাব করেন তিনি।
তিনি বলেন, ইয়োলোবুকে প্রদর্শিত নতুন মূল্যের সাথে জাপানের অভ্যন্তরীণ বাজারের খুচরা বিক্রেতার ডিলার কমিশন ২০ শতাংশ যুক্ত করা আছে। তাই পুরনো গাড়ির রফতানিযোগ্য মূল্যে এই ২০ শতাংশ বিয়োজন না দিলে বৈষম্য কমানো যাবে না।
এর জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম পুরনো গাড়ির রফতানিযোগ্য মূল্যে ২০ শতাংশ বিয়োজন দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানান।
তিনি বলেন, আমরা যে হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি, তাতে ভবিষ্যতে ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ আরো বাড়বে। তবে মনে রাখতে হবে বিদেশ থেকে আমদানি করে গাড়ির চাহিদা যেমন মেটানো প্রয়োজন, পাশাপাশি দেশে গাড়ি প্রস্তুত করার বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে।
এর আগে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনটি দেশীয় সিরামিক শিল্পখাতের সুরক্ষায় কাঁচামালের আমদানিতে ময়েশ্চার সমন্বয় এবং কাঁচামাল ও উপকরণের উপর হতে আমদানি শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করেন। বিশেষ করে তারা টাইলস উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এসময় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা কেবল দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে চাই না, পাশাপাশি এই শিল্পকে আরো শক্তিশালী করতে চাই। তবে সরকারের রাজস্ব আহরণের বিষয়টি আমাদের সবাইকে ভাবতে হবে।
তিনি টাইলস উৎপাদনে সম্পূরক শুল্ক কমানোসহ অন্যান্য যৌক্তিক প্রস্তাবসমূহ বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানান।
উল্লেখ্য, আজ বৃহস্পতিবার থেকে এনবিআর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও পেশাজীবিদের সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা শুরু করেছে। আগামী ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত এই আলোচনা চলবে।