বাসস দেশ-৩৯ : করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সমন্বয় উদ্যোগের প্রস্তাব

438

বাসস দেশ-৩৯
সার্ক-করোনা
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সমন্বয় উদ্যোগের প্রস্তাব
ঢাকা, ১৫ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সমন্বিতভাবে মোকাবেলা প্রসঙ্গে বলেছেন, কোন দেশের একার পক্ষে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘কোন দেশরই একার পক্ষে এই ভাইরাস মোকাবেলা করা সম্ভব নয়, নজিরবিহীন মাত্রার এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে এক দেশকে অপর এক দেশের সহযোগিতা করা প্রয়োজন।’
তিনি আজ বিকেলে মালদ্বীপে তার কার্যালয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা সংক্রান্ত সার্ক শীর্ষ ভিডিও সম্মেলনে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) ভিডিও সম্মেলনের উদ্যোগ নেন।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, গত ৭ মার্চ তাঁর দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সনাক্ত হয়। এ পযর্ন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত ১৩ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে। তবে কেউ মারা যায়নি।
তিনি বলেন, গত জানুয়ারি’র পর থেকে তাঁর দেশ সম্ভাব্য এই ভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহনে পদক্ষেপ গ্রহন করে। তিনি বলেন, আমরা এ লক্ষ্যে উন্নতমানের চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন দ্বীপে চিকিৎসা সুবিধা ও কোয়ারেন্টাই নিশ্চিত করি। তিনি আরো বলেন, দেশে করোনা ভাইরাস ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়লে তাঁর দেশের জনগন এবং হাজার হাজার পর্যটকের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, এখন আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই ভাইরাস সম্পর্কে পূর্ব সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে আমাদের সীমিত সম্পদে এর চিকিৎসা করা আমাদের জন্য বোঝা না হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, মালদ্বীপের অপূর্ব ভৌগোলিক সুবিধা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবসময়ে একটি সুযোগ করে দিবে। ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহভাজনদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের জন্য আমাদের বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলো অনেকটা সহায়ক হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে, যদি বাইরের দ্বীপগুলোতে কোনও ব্যক্তির পরীক্ষায় পজেটিভ আসে এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে তার বিশেষজ্ঞ সেবার প্রয়োজন হয়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে রাজধানী মালেতে নিয়ে যেতে হয়। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এটি স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জন্য প্রচুর চাপ সৃষ্টি করে। ইতোমধ্যে ওই আঞ্চলিক হাসপাতালগুলোর উন্নয়ন করা হচ্ছে। সাধারণভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী পেশাজীবী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ঘাটতি থাকার বিষয়টিকে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে সোলিহ বলেন, এ জাতীয় সঙ্কটে এই ধরনের চ্যালেঞ্জ কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতের জনগণের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘মালদ্বীপ সৌভাগ্যবান যে ভারত থেকে উদার সহায়তা পেয়েছে এবং মালদ্বীপের চিকিৎসা স্বাস্থ্যসেবায় পেশাদারদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমরা পরিদর্শনকারী চিকিৎসক ত্রাণ দলও পেয়েছি।’ মালদ্বীপে ভাইরাসটি খুবই ধ্বংসাত্মক ভাবে ধাক্কা দিয়েছে উল্লেখ করে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রথম ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই এখানে পর্যটক আসা অনেকটাই কমে গেছে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে আগমনকারীদের সংখ্যা কমেছে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং এই মাসের প্রথম ১০ দিনে ইতোমধ্যে পর্যটক আসার পরিমাণ ২২ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘পর্যটকদের আগমনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে এই বছর আমাদের পর্যটক সংখ্যা ৩৫ শতাংশ হ্রাস পাবে’। পর্যটক আসা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেলে মালদ্বীপের অর্থনীতিতে একটি প্রভাব ফেলবে ।
কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে একটি বিস্তৃত আঞ্চলিক কৌশল প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রস্তাবের প্রশংসা করে তিনি তিনটি মূল বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন- জরুরি স্বাস্থ্যসেবা এজেন্সিগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ট সহযোগিতার স্থান তৈরি, একটি সাশ্রয়ী ত্রাণ প্যাকেজ প্রণয়ন এবং এই অঞ্চলের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী রিকোভারি প্লান করা।
তিনি দীর্ঘ সময়ের জন্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠনের জন্য মোদির প্রস্তাবগুলোকে স্বাগত জানান।
বাসস/এসএএইচ/অনু-অমি-কেজিএ/২২৩৫/কেএমকে