বাজিস-৬ : কয়রায় চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে অত্যাধুনিক আবহাওয়া কেন্দ্রের কার্যক্রম

318

বাজিস-৬
কয়রা-কার্যক্রম
কয়রায় চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে অত্যাধুনিক আবহাওয়া কেন্দ্রের কার্যক্রম
খুলনা, ১২ জুলাই ২০১৮ (বাসস) : খুলনা জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার অত্যাধুনিক আবহাওয়া অফিসটি চলতি মাসেই চালু হতে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিসটি চালু হলে এখান থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্ক-বার্তা দেয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে নৌ সতর্ক-বার্তা দেয়া হয় কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিস ঢাকা থেকে। কয়রা আবহাওয়া অফিস চালু হলে সেক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চলের দুর্যোগপ্রবন এলাকার মানুষকে ঢাকার উপর নির্ভর করতে হবে না।
গংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপকূলীয় জনপদের মানুষের মাঝে দুর্যোগের আগাম সতর্ক-বার্তা পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে সরকারিভাবে উপকূলীয় এলাকায় ২০০৮ সালে ১৩টি আবহাওয়া অফিস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ী উপকূলীয় উপজেলায় কয়রাও একটি আবহাওয়া অফিস নির্মাণ করা হয়। অফিসটির নির্মাণ কাজ দুই বছর আগে সম্পন্ন হলেও আজও তার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে ইতিমধ্যে আবহাওয়া অফিসটিতে জনবল দেয়া হয়েছে। চলে এসেছে আনুসঙ্গিক যন্ত্রপাতিও। তবে দাপ্তরিক কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। উপকূলীয় এলাকার মানুষের জান-মাল রক্ষায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেয়ার সরকারি এ উদ্যোগকে সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছে।
কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রমেশ চন্দ্র সরকার বলেন, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে শতাব্দীর ভয়াবহ সুপার সাইক্লোন সিডর আঘাত হানে দেশের উপকূলীয় এলাকায়। সে সময় কয়রা উপজেলায় ২৬ জন লোকের প্রাণহানি ঘটে। জীবিকার তাগিদে সুন্দরবন অভ্যন্তরে যাওয়া ভাগ্যাহত অসংখ্য জেলে বাওয়ালীর মৃত্যু হয় সে রাতে। সে ধ্বংসযজ্ঞের রেশ কাটতে না কাটতেই ২০০৯ সালে ২৫ মে সর্বগ্রাসী আইলা এসে হানা দেয় উপকূলীয় এলাকায়। এতে প্রাণ হারায় কয়রা অর্ধশতাধিক মানুষ। ক্ষতির পরিমাণ কেউ নিরূপন করতে পারেনি। এ ছাড়া ২০১৩ সালের জুন মাসে চলে গেল মহাসেন নামের দুর্যোগ।
কয়রা এলাকার বাসিন্দা মোঃ রিয়াছাদ আলী জানান, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই বার বার এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে এ অঞ্চলের মানুষ হারিয়েছে তাদের স্বজন এবং সহায় সম্পদ। আজ অনেকেই নিঃস্ব। এ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া গেলে জানমালের ক্ষতির পরিমাণ কমতো।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ মোঃ আমিরুল আযাদ বলেন, পর পর দুটি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংগঠিত হওয়ার পর উপকূলীয় এলাকার মানুষের নিরাপত্তার বিয়য়টি বিবেচনা করে সরকারি-বেসরকারি নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে দুর্যোগের খবরটি তাৎক্ষণিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এলাকা ভিত্তিক আবহাওয়া অফিস নির্মাণটি উল্লেখযোগ্য। সেই পরিকল্পনা অনুয়ায়ী এটি তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, কয়রা আবহাওয়া অফিসটিতে ইতিমধ্যে প্রয়াজনীয় যন্ত্রপাতি চলে এসেছে। এ মাসেই ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে সেটি স্থাপন করে যাবে। এই অফিসে একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ২ জন সিনিয়র অবজারভারসহ ৯ জনের জনবল থাকবে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৯৩১/মরপা